স্বপ্ন-ষড়যন্ত্র-দাসত্ব-দুর্ভিক্ষ-রাজত্ব—কী দারুণ এক সত্য আখ্যান! বাধা-বিপত্তির দেয়াল পেরিয়ে মঞ্জিলে পৌঁছার এই অসাধারণ গল্প কোটি হৃদয়কে উজ্জীবিত করছে শত সহস্র বছর ধরে। হতাশার পাহাড় মাড়িয়ে আশার আলো জ্বালিয়ে দেওয়ার এ গল্প আজকের প্রজন্মকেও স্পর্শ করে খুব। লালসার সমুদ্রে এ যেন পবিত্র একফোঁটা স্বচ্ছ জলবিন্দু! ইউসুফ আলাইহিস সালাম আমাদের বিজয়ী মহানায়ক, বিশ্বাসীদের নকিব। সূরা ইউসুফ আমাদের প্রত্যাশিত জীবনের এক অনন্য রিফ্লেকশন।স্বপ্ন-ষড়যন্ত্র-দাসত্ব-দুর্ভিক্ষ-রাজত্ব—কী দারুণ এক সত্য আখ্যান! বাধা-বিপত্তির দেয়াল পেরিয়ে মঞ্জিলে পৌঁছার এই অসাধারণ গল্প কোটি হৃদয়কে উজ্জীবিত করছে শত সহস্র বছর ধরে। হতাশার পাহাড় মাড়িয়ে আশার আলো জ্বালিয়ে দেওয়ার এ গল্প আজকের প্রজন্মকেও স্পর্শ করে খুব। লালসার সমুদ্রে এ যেন পবিত্র একফোঁটা স্বচ্ছ জলবিন্দু! ইউসুফ আলাইহিস সালাম আমাদের বিজয়ী মহানায়ক, বিশ্বাসীদের নকিব। সূরা ইউসুফ আমাদের প্রত্যাশিত জীবনের এক অনন্য রিফ্লেকশন।
দয়াময় রব গোটা সৃষ্টিজগৎকে সাজিয়েছেন অপরূপ নৈপুণ্যে, সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়েছেন অনুপম কারুকার্যের হাজারো নিদর্শন। কত বদল আর বৈচিত্র্যে ঠাসা এ চরাচর! যেন প্রভুর পরম আসমানি স্পর্শ লেগে আছে প্রতিটি কোণে। একেক সৃষ্টিকে তৈরি করেছেন একেক ব্যঞ্জনায়। এজন্যই তো অহংকার তাঁর আপন চাদর। আমাদের যত প্রার্থনা ও স্তুতি—সকলই কেবল তাঁকে ঘিরে। তিনিই মানুষকে পাঠিয়েছেন জোড়ায় জোড়ায়; একে অন্যের ভূষণরূপে। আমাদের সমৃদ্ধ করেছেন উত্তম রিজিকে, প্রখর মেধা আর তারুণ্যের প্রাণোচ্ছল চঞ্চলতায়। ভরসার ছায়া আর অবারিত অনুগ্রহে আগলে রেখেছেন তামাম কুল-কায়েনাত।
এসবেরই স্বচ্ছন্দ ও সুখপাঠ্য পর্যালোচনা হাজির করেছেন বর্তমান সময়ের তুমুল জনপ্রিয় দাঈ শাইখ মিজানুর রহমান আজহারি। তরুণ প্রজন্মের সামনে পেশ করেছেন সুস্থ-সুন্দর, সময়োপযোগী ও ঈমানদীপ্ত জীবনের নববি চালচিত্র। সময়ের সবুজ সওয়ারিদের আহ্বান করেছেন গৌরবময় সত্যের পথে।
মুসলিম হিসেবে হালাল-হারামের ব্যাপারে আমাদের সর্বোচ্চ সতর্কতা আবশ্যক। অবশ্য কিছু বিষয়ের হালাল-হারাম হওয়া নিয়ে কখনো কখনো বেশ দ্বন্দ্বে পড়ে যাই আমরা। এটা হালাল হলে ওটা হারাম কেন, এভাবে হারাম হলে ওভাবে হালাল কেন—এ জাতীয় নানা প্রশ্ন আমাদের মাথায় ঘুরতে থাকে। দিশেহারা হয়ে পড়ি আমরা। অথচ কোনো কিছুর হালাল কিংবা হারাম সাব্যস্ত হওয়ার যে সামান্য কিছু মূলনীতি রয়েছে, সেগুলো জানা থাকলে এ অবস্থা থেকে অনেকাংশেই বেঁচে থাকা সম্ভব।
একজন মুসলিমের জন্য কোন কাজটি হালাল আর কোনটি হারাম, কোন কাজ এক জায়গায় জায়িয হলেও অন্য জায়গায় বা অন্য সময়ে নাজায়িয, কোনো কাজ জায়িয এবং নাজায়িয হওয়ার কারণগুলোই বা কী? ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক-জীবনঘনিষ্ঠ এমন অসংখ্য বিষয়ের বাস্তবধর্মী আলোচনা নিয়ে ড. ইউসুফ আল-কারযাবি রাহিমাহুল্লাহর বিশ্বজুড়ে সাড়াজাগানো গ্রন্থটি প্রকাশিত হলো ‘হালাল-হারামের বিধান’ নামে।
প্রায় অসম্ভব ও রুদ্ধশ্বাস বহুবিধ প্রক্রিয়া ইসলামি খিলাফতের পরিবেশকে গুমোট করে রেখেছে। নানা ঝঞ্ঝাট, নানা বিভ্রাট, নানা ফিতনা ও সমস্যায় আকীর্ণ পৃথিবীতে কে কার দায়িত্ব নেয়, কে কাকে মান্যতা দেয়—তার কোনো ইয়ত্তা নেই। কেন্দ্র আর কেন্দ্রে নেই, উৎস তার উৎসে নেই—তা ছেয়ে গেছে ও ছড়িয়ে পড়েছে, তা ঝুলে গেছে ও ঢলে পড়েছে—সভ্যতা থেকে অসভ্যতার দিকে, শীতল-শান্তি থেকে চাঞ্চল্যের দিকে, ঈমান থেকে কুফর ও মুনাফিকির দিকে।
ইসলামি খিলাফতের প্রসিদ্ধ নগরীগুলোর পরস্পর রশি টানাটানিতে তাদের মূলসূত্রগুলোই ছিঁড়েখুঁড়ে ফালি ফালি হয়ে গেছে। কাবা শরিফ ও মসজিদে নববিতে এসে বাজামাআত দুরাকাআত নামাজ আদায়ের জন্য এখন আর কারও মনের ভেতর তেমন কোনো উদ্দীপনা কিংবা চৈতন্য কাজ করে না; ইসলামি শরিয়ার আদল ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য কোনো কোশেশ কারও মধ্যে পরিলক্ষিত হয় না। সবাই সব জায়গায় প্রত্যেকের নিজস্ব মতামত, অভিরুচি ও দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে।
ইতিহাসের এমনই এক যুগসন্ধিক্ষণে এসে খিলাফতের আসনে অধিষ্ঠিত হন ইলমে নববি তথা নবুওয়তি জ্ঞানের রাজতোরণ-খ্যাত সাহসী বীর সিপাহসালার, নবি-তনয়া ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু আনহার প্রিয় জওহার, আমিরুল মুমিনিন আলি ইবনু আবি তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহু।
প্রিয় পাঠক, এই গ্রন্থে তার ব্যক্তিজীবন, রাষ্ট্রীয় জীবন ও খিলাফতি জীবনের সকল খুঁটিনাটি বিষয় বিধৃত হয়েছে। এবং লেখকের আশ্চর্য জাদুকরি কলমে তার সামষ্টিক জীবনচরিত হয়ে গেছে এক অদ্ভুত সম্মোহনী ও সত্যভুক বিশদপুরাণ উপাখ্যান।
কেউ জানে না কার ভবিতব্য কীভাবে কতটা নিরুপদ্রবে পার হবে। কতটা দুঃখ-দুর্দশা, ব্যথা-বেদনা ও অপরিসীম মানস-যন্ত্রণা মানুষকে ভোগ করতে হবে। তবু অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা একটুখানি তলিয়ে দেখে গভীরভাবে ভাবতে গেলেই গা শিউরে ওঠে। মানসজগৎ বাষ্পীভূত হয়ে যায়।
যে-সকল আলোকিত মানুষ প্রিয়নবি হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সরাসরি সান্নিধ্য লাভ করেছেন, তার ওহিপূর্ণ জ্যোতির্ময় হাত ধরে ঈমানের আলোয় আলোকিত হয়েছেন, তাদের কিছু মানুষ তার ইন্তিকালের পর অদ্ভুতরূপে পালটে যায়। দিকে দিকে জাহিলিয়াতের যুগের মতো আবারও আরব্য গোত্রপ্রীতিবোধ, আভিজাত্য-ভাব, অহেতু অহংকার ও মিথ্যাচার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
যে ইসলাম মানুষকে সবচেয়ে সাচ্চা ও সত্যাশ্রয়ী রূপে গড়ে তোলে, সেই মানুষই আবার ইসলামকে লঙ্ঘন করতে কুণ্ঠাবোধ করে না। অতি তুচ্ছ প্রয়োজনে মানুষ হত্যা করতেও কসুর করে না। তা যদি হয় আবার ইসলামের তৃতীয় খলিফা, আমিরুল মুমিনিন উসমান ইবনু আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহুর মতো ইসলামের জলিলুল কদর সাহাবি, নবিজির আদরের দুই মেয়ের জামাতা তথা কাতিবে ওহিকে হত্যা করা।
এই গ্রন্থে উসমান ইবনু আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফতকাল ও তার শাসনব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে আলোকপাত করা হয়েছে। নির্মোহভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে তার সময়ের পরিবেশ-প্রতিবেশ তথা চতুষ্কোণকে। প্রিয় পাঠক, তার অনুষঙ্গে এখানে এমন কিছু নতুন প্রশ্ন ও নতুন উত্তর খুঁজে পাবেন, যা হয়তো আপনি সত্যিই আগে এমনভাবে এতটা মনোনিবেশ নিয়ে অনুধাবন করেননি। এটিই এই গ্রন্থের সপ্রাণ সার্থক স্বাতন্ত্র্য।
যার কথা ওহি তথা প্রত্যাদেশের মতো সত্য শোনা যায়, যার আশঙ্কা বাস্তবতার নিরিখে অবিকল প্রতিফলিত হয়, যার ইশারায় অর্থাৎ ভ্রূভঙ্গির সঙ্গে মনোভঙ্গির অদ্ভুত এক মেলবন্ধন ঘটে, যার সাহসে দৃঢ়তায় শৌর্যে ও বীরত্বে যাবতীয় অসত্য অন্যায় সংশয় ও অন্ধকার দূরীভূত হয়ে যায়, তিনি আরব-শার্দূল বজ্রকণ্ঠ সিংহপুরুষ আমিরুল মুমিনিন হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু।
উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফতকাল ছিল ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে সুন্দর, সবচেয়ে প্রসারণশীল, সবচেয়ে সমৃদ্ধ খিলাফতকাল। তার শাসনকালেই জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর মাধ্যমে দিকে দিকে ইসলামের সর্বাধিক বিকাশ ঘটে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়। শাসনব্যবস্থা শৃঙ্খলা ফিরে পায়। হিজরি সনের প্রবর্তন ঘটে। ব্যক্তি থেকে সমাজে রাষ্ট্রে সুশাসন ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা পায়।
এই গ্রন্থে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফতকাল ও তার শাসনব্যবস্থার সামগ্রিক বিষয়াবলি নতুনরূপে আধুনিক পর্যবেক্ষণী দৃষ্টি দিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। প্রিয় পাঠক, আসুন, এই তথ্যপূর্ণ ও বিশ্লেষণী গ্রন্থটি পাঠের মধ্য দিয়ে আমরা কবির ভাষায় পুনর্বার উচ্চারণ করি
আজকে উমর-পন্থি পথীর দিকে দিকে প্রয়োজন পিঠে বোঝা নিয়ে পাড়ি দেবে যারা প্রান্তর প্রাণপণ;
উষর রাতের অনাবাদী মাঠে ফলাবে ফসল যারা, দিক-দিগন্তে তাদেরে খুঁজিয়া ফিরিছে সর্বহারা!
সত্যের সঙ্গে যার শুভযোগ, আমলে সুকর্মে যার সৌকর্য, ন্যায়ের প্রশ্নে যিনি উৎকণ্ঠ এবং গোটা মুসলিম উম্মাহর মধ্যে প্রিয়নবি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বহুল কাঙ্ক্ষিত দারসে সহবতে যার প্রকৃত উৎকর্ষ ও সমুন্নতি, তিনি আর কেউ নন, তিনি চির কোমলপ্রাণ চির বিনম্রজন, ঈমানদীপ্ত চির নিবেদিত চিত্ত, নবিপ্রেমের ফোয়ারা, হিজরতের পথের সাথি, ইসলামের ইতিহাসের প্রথম খলিফা, খলিফাতুল মুসলিমিন আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু। ইসলামধর্ম যাদের ত্যাগে তিতিক্ষায় ও কুরবানির দৌলতে আজ অবিকৃত, বিশুদ্ধ ও মূলানুগ চারিত্র্য নিয়ে সারাবিশ্বে সমাদৃতি লাভ করেছে, একা আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর অবদান তাদের সবার শীর্ষে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওফাতের পর উম্মাহ যখন পথভ্রান্ত ও দিশেহারা, তখন তিনিই অবিচল অন্তরে ঐশী রোশনাই হাতে সকলকে পথ দেখালেন। চির অন্ধকারের দিকে ধাবিত উম্মাহকে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের চির জীবন্ত ও শাশ্বত দ্বীনের পথে ফিরিয়ে আনলেন। প্রিয় পাঠক, মুসলিম উম্মাহর গুরুদায়িত্ব নিয়ে তিনি খিলাফতের আসনে কীভাবে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন, ইরতিদাদের ফিতনাকে কীভাবে সামলে ছিলেন, বেপথু মানুষকে কীভাবে আদরে-সমাদরে, শাসনে-তোষণে, সহজ ও কঠোরতায় আগলে রেখেছিলেন, সর্বোপরি সমূহ প্রতিকূল পরিবেশেও ইসলামের পতাকাকে কীভাবে সর্বোচ্চে উড্ডীন রেখেছিলেন, তার বিশদ ও সবিস্তার আলোচনা আপনি এই গ্রন্থের পাতায় পাতায় অতি মনোজ্ঞ ও প্রাঞ্জল ভাষায় স্বভাবসম্মত ভঙ্গিমায় সদুত্তরযুক্ত কৌতূহলে অনায়াসে খুঁজে পাবেন।
খিলাফতে রাশিদা অর্থাৎ বিশ্বমানবতার একটি আলোকদীপ্ত কাফিলা—যারা শেষ নবি মুহাম্মদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের তিরোধানের পর ইসলাম-ধর্মের হাল ধরেন। ইসলামের তীব্র জ্যোতির্ময় বিচ্ছুরিত আলোকচ্ছটা সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দেন। নবিজির আনীত সাচ্চা ওহিপূর্ণ ধর্মে কোনোরূপ বিকৃতি হতে দেননি। ইসলামের পাঁচ স্তম্ভ—কালিমা, নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাতের বিধানকে অবিকল অক্ষুণ্ন রেখে শান্তিপ্রিয় ইসলামি-মানবতাবোধকে একচুলও বিচ্যুত হতে দেননি। যারা বিনয়ে নম্রকণ্ঠ। বিদ্রোহে উচ্চশির। দান-অনুদানে মুক্তহস্ত। চিন্তাদর্শনে স্বচ্ছ ও সম্ভ্রমশীল। গোটা মুসলিম উম্মাহ যাদের মহত্তম কর্ম-অনুপ্রেরণায় দীপিত-উজ্জীবিত। এমনই ছিলেন ইসলামের মহান চার খলিফা তথা আবু বকর সিদ্দিক, উমর ইবনুল খাত্তাব, উসমান ইবনু আফফান ও আলি ইবনু আবি তালিব—রাদিয়াল্লাহু আনহুম। নিখাদ, নিখুঁত ও নিষ্কলুষ চরিত্রের অধিকারী পৃথিবীর সেরা মানুষ। তারা যুদ্ধ করেছেন। সন্ধি করেছেন। তরজা করেছেন। রাষ্ট্রপরিচালনা করেছেন। ব্যক্তি ও সমষ্টিগত জীবনে ইসলামের সর্বোত্তম সুন্দর আদর্শটি বেছে নিয়ে তার পর সেই অনুপাতে পথ চলেছেন। সত্য ও ন্যায়ের প্রশ্নে চির আপসহীন এই চার-সাহাবির জীবনে এমন কোনো ঘটনা নেই, যাতে পরবর্তী কালের উম্মাহর জন্য শিক্ষা ও তারবিয়ত নেই। তাদের সকল ঘটনা ও আচরিত জীবন থেকে, চিন্তা ও অনুভাবনা থেকে সবক হাসিল করেই মুসলিম উম্মাহ সঠিক পথের দিশা পান।
‘ইসলাম, সে তো পরশ-মানিক, তাকে কে পেয়েছে খুঁজি<br> পরশে তাহার সোনা হল যারা, তাদেরেই মোরা বুঝি।
অথবা আসহাবি কাননুজুম... অর্থাৎ আমার সাহাবিগণ নক্ষত্রতুল্য। যারই অনুসরণ করা হোক, হিদায়েতপ্রাপ্ত হবে। এমন হিদায়েতপ্রাপ্ত, আলোকময় ও সোনার মানুষদের সর্দার ও নেতৃস্থানীয় চার সাহাবির বিশ্বস্ত ও বিশদ জীবনী নিরপেক্ষভাবে জানতে হলে বাংলা ভাষায় এই বই পাঠের বিকল্প নেই। প্রিয় পাঠক, সত্যিই বেহেশতি সওগাতের এ এক আশ্চর্য অনুপম অপূর্ব জীবনগাথা বা জীয়নকাঠি!
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দৈনন্দিন জীবন কীভাবে কাটত, বাৎসরিক জীবন কীভাবে কাটত, ৩৬৫ দিন তিনি কীভাবে অতিবাহিত করতেন, বিশেষায়িত করতেন কোন দিনগুলোকে, কোন দিনগুলোতে আনন্দ উদযাপন করতেন, কীভাবে করতেন, মাধ্যম কী হত, তার পরিমাণ কতটুকু হত—এর সবই পূর্ণাঙ্গ একটি জীবনের জন্য আবশ্যকীয়।
রাসুলুল্লাহর জীবনের ৩৬৫ দিনকে তুলে আনা হয়েছে এ বইটিতে। একজন মুমিনের জীবনের গোটা সময়টা স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে পরিচালনার একটি নকশা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটিতে। সে অনুযায়ী জীবন গড়ে তুলতে পারলে, নবিজির মতো করে বছরের ৩৬৫ দিন অতিবাহিত করতে পারলেই তা হবে একটি পূর্ণাঙ্গ মুমিনচরিত।
বইটিকে আমরা দুটি ভাগে বিভক্ত করেছি। প্রথম অধ্যায়ে দৈনন্দিন জীবনে নবিজির দিনলিপির অনুকূলে অর্থাৎ সারাদিনে নবিজির সুন্নাত অনুযায়ী মুমিনের দিনযাপন কেমন হবে তা তুলে ধরা হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে বারো মাস যাপনের জন্য আমাদের করণীয়-বর্জনীয় ও আমল কী, তার সাথে সম্পৃক্ত নানান বিষয়াদি, শরিয়তের বিভিন্ন জরুরি রুকন, নবিজির সাধারণ আচরণ, চালচলন, ব্যক্তিত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরা হয়েছে এ বইটিতে।
উম্মতের বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু। শামের প্রতিটি স্থান যার বীরত্ব এবং বিজয়ের সাক্ষী। মক্কার অলি-গলি যার উত্তম আখলাক-শিষ্টাচার এবং দক্ষতা-প্রাজ্ঞতার সাক্ষী; ইসলামের সত্য-সৌন্দর্য তাকে মুগ্ধ করেছিল প্রথমদিকেই। হজরত আবু বকরের মাধ্যমে তিনি ইসলামের সৌন্দর্যকে নিজের জীবনের জন্য নির্ধারণ করেছিলেন।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৃত্যুর পর বনু সাইদার বৈঠকে আবু বকর তাকে খলিফা হিসেবে পছন্দ করেছিলেন। কিন্তু নবিজির গুহাগহ্বরের বন্ধুর উপস্থিতিতে এই অবস্থানের জন্য তিনি নিজেকে যোগ্য মনে করলেন না। যুদ্ধের বীর ময়দানে ছুটে গেলেন। একের পর এক দখল করলেন কাফিরদের ভূমি। উড্ডীন করলেন ইসলামের পতাকা।
হজরত উমরের খিলাফতকালে প্লেগ মহামারি শামকে আক্রান্ত করল। উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকে রক্ষার জন্য মদিনায় ডেকে পাঠালেন। কিন্তু শাহাদাতের আকাঙ্ক্ষী শামবিজেতা এই মহাবীর নিজ সৈন্যদের রেখে মদিনা যেতে অনাগ্রহ প্রকাশ করলেন এবং ভয়ঙ্কর মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে জীবন হারালেন। হজরত উমর মৃত্যুকালে বলেছিলেন, আজ যদি আবু উবাইদা থাকত, আমি তাকেই আমার পরবর্তী খলিফা নির্বাচন করতাম। রাদিয়াল্লাহু আনহু ওয়া রাদু আনহু।
মিসরের প্রখ্যাত মুহাক্কিক, লেখক ও সাহিত্যিক শাইখ মুহাম্মদ আশরাফ আল-ওয়াহশ রচিত এর গ্রন্থ আমাদের এ মহান সাহাবিরই গল্প শোনাবে।
জাইদ ইবনু আমর ইবনু নুফাইল জাইদ রাদিয়াল্লাহু আনহুর পিতা। জাহিলিযুগে যিনি আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসী ছিলেন এবং নবিজির জীবদ্দশায়, নবুওয়াতের পূর্বে তিনি এই বিশ্বাসের ওপরই মৃত্যুবরণ করেন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার বিষয়ে জান্নাতের ঘোষণা করেছেন।
সাইদ ইবনু জাইদ রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন প্রথম সারির মুসলিম। তিনি হজরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর বোনজামাই ছিলেন। হজরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর বোন ফাতিমা; যিনি উমরের মুসলিম হওয়ার কারণ ছিলেন, তিনি সাইদ ইবনু জাইদের স্ত্রী ছিলেন এবং তারা উভয়ে একত্রে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। দুনিয়াবিমুখ এই বাদশাহ সবসময় দুনিয়াকেএড়িয়ে চলতেন। জিহাদের ময়দানে ছুটে চলতেন। এক জিহাদের ময়দান থেকে অন্য ময়দানে ছুটে যেতেন। শাসন থেকে হাত গুটিয়ে রাখতেন। বদর থেকে আরম্ভ করে জীবনের পুরোটা সময় কাটিয়ে তিনি দেন জিহাদের ময়দানে; বীরের বেশে।
মিসরের প্রখ্যাত মুহাক্কিক, লেখক ও সাহিত্যিক শাইখ মুহাম্মদ আশরাফ আল-ওয়াহশ রচিত এর গ্রন্থ আমাদের এ মহান সাহাবিরই গল্প শোনাবে।
জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্তদের মাঝে অন্যতম একজন। জ্ঞান, গবেষণা, চিন্তা-ভাবনায় ছিলেন অত্যন্ত সূক্ষ্মদর্শী। আবয়ব ছিল আকর্ষণীয়। নৈতিকতা, মহত্বে ছিলেন দৃষ্টি আকর্ষক। সবমিলিয়ে তিনি ছিলেন সমাজের সকলের কাছে গ্রহণীয় ব্যক্তিত্ব। সকলের শ্রদ্ধার পাত্র। সূক্ষ্মদর্শী, নম্র-ভদ্র আবদুর রহমান ইবনু আউফ লড়াইয়ের ময়দানে কোমল থাকতেন না, হয়ে উঠতেন ময়দানের বীর। শত্রুদের সারি ভেদ করতেন, ব্যুহ ভেঙে দিতেন, ছত্রভঙ্গ করে দিতেন।
হজরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু মৃত্যুর সময় ছয় সদস্যের একটি শুরা কমিটি গঠন করেন। তাদের থেকে একজনকে খলিফা মনোনিত করার অসিয়ত করেন। হজরত আবদুর রহমান ইবনু আউফ ছিলেন সেই কমিটির একজন। তিনি নিজের ক্ষমতার দাবি প্রত্যাহার করে উম্মতের ফায়দার লক্ষ্যে খলিফা নির্বাচনের ভার নিজ কাঁধে তুলে নেন এবং উম্মতের সম্মতিক্রমে হজরত উসমান ইবনু আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহুকে খলিফা নির্বাচিত করেন।
ন্যায়-নিষ্ঠা আর নম্রতায় ভরপুর এই মহান সাহাবি ছিলেন দানবীর এবং দয়ালু। উম্মাহাতুল মুমিনিনের খাদিম। জীবনের পঁচাত্তরটি বসন্ত শেষে বত্রিশ হিজরি সনে তিনি রফিকে আলার দিকে নিজ যাত্রাপথ বেছে নেন। রাদিয়াল্লাহু আনহু ওয়া রাদু আনহু। মিসরের প্রখ্যাত মুহাক্কিক, লেখক ও সাহিত্যিক শাইখ মুহাম্মদ আশরাফ আল-ওয়াহশ রচিত এর গ্রন্থ আমাদের এ মহান সাহাবিরই গল্প শোনাবে।
জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্তদের মাঝে অন্যতম একজন। জ্ঞান, গবেষণা, চিন্তা-ভাবনায় ছিলেন অত্যন্ত সূক্ষ্মদর্শী। আবয়ব ছিল আকর্ষণীয়। নৈতিকতা, মহত্বে ছিলেন দৃষ্টি আকর্ষক। সবমিলিয়ে তিনি ছিলেন সমাজের সকলের কাছে গ্রহণীয় ব্যক্তিত্ব। সকলের শ্রদ্ধার পাত্র। সূক্ষ্মদর্শী, নম্র-ভদ্র আবদুর রহমান ইবনু আউফ লড়াইয়ের ময়দানে কোমল থাকতেন না, হয়ে উঠতেন ময়দানের বীর। শত্রুদের সারি ভেদ করতেন, ব্যুহ ভেঙে দিতেন, ছত্রভঙ্গ করে দিতেন।
হজরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু মৃত্যুর সময় ছয় সদস্যের একটি শুরা কমিটি গঠন করেন। তাদের থেকে একজনকে খলিফা মনোনিত করার অসিয়ত করেন। হজরত আবদুর রহমান ইবনু আউফ ছিলেন সেই কমিটির একজন। তিনি নিজের ক্ষমতার দাবি প্রত্যাহার করে উম্মতের ফায়দার লক্ষ্যে খলিফা নির্বাচনের ভার নিজ কাঁধে তুলে নেন এবং উম্মতের সম্মতিক্রমে হজরত উসমান ইবনু আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহুকে খলিফা নির্বাচিত করেন।
ন্যায়-নিষ্ঠা আর নম্রতায় ভরপুর এই মহান সাহাবি ছিলেন দানবীর এবং দয়ালু। উম্মাহাতুল মুমিনিনের খাদিম। জীবনের পঁচাত্তরটি বসন্ত শেষে বত্রিশ হিজরি সনে তিনি রফিকে আলার দিকে নিজ যাত্রাপথ বেছে নেন। রাদিয়াল্লাহু আনহু ওয়া রাদু আনহু। মিসরের প্রখ্যাত মুহাক্কিক, লেখক ও সাহিত্যিক শাইখ মুহাম্মদ আশরাফ আল-ওয়াহশ রচিত এর গ্রন্থ আমাদের এ মহান সাহাবিরই গল্প শোনাবে।
আরবের এক অদম্য সাহসী ছেলে জুবাইর। পিতাহীন জুবাইর ছিলেন অতুলনীয় সাহস আর বুদ্ধিমত্তার অধিকারী। আরবের বৈরী পরিবেশ এবং মাতার শাসন তাকে কঠিন সংকল্পবদ্ধ এবং দুঃসাহসী করে তুলেছিল। তাকে ভয় পাইয়ে দেওয়ার মতো কোনো আরব ছিল না মক্কায়। দুর্দমনীয় এই বীর, কিশোর বয়সেই প্রবেশ করেন ইসলামের শান্ত-স্নিগ্ধ ছায়াতলে।
ইসলাম এবং ইসলামের নবির শত্রুরা তাকে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি করে। সয়ে যান তিনি ব্যথা-বেদনা, দুঃখ-দুর্দশা। কিন্তু একদিন নবিজিকে হত্যা করবে কাফিররা শুনে কিশোর জুবাইর অগ্নিশর্মা হয়ে উঠেন। উন্মুক্ত তরবারি হাতে ছুটেন পরিকল্পিত স্থানে। হয়ে যান ইসলামের জন্য প্রথম তরবারি উন্মোচক। বদর উহুদে আরবি এই বীরের নৈপুণ্য ছিল অবাক করার মতো। কুরাইশের বড় বড় বীরদের জাহান্নামে পাঠিয়েছেন নির্বিঘ্নে। আঘাতে আঘাতে জর্জরিত হয়েছেন নিজেও। তবুও লড়েছেন। ইসলামের এই মহাবীরের জীবন ছিল এমনই-সব বীরত্বপূর্ণ গল্পের সমাহার। ইসলামের জন্য তার অবদান চিরভাস্বর হয়ে থাকবে ইতিহাসের পাতায় পাতায়। রাদিয়াল্লাহু আনহু ওয়া রাদু আনহু। মিসরের প্রখ্যাত মুহাক্কিক, লেখক ও সাহিত্যিক শাইখ মুহাম্মদ আশরাফ আল-ওয়াহশ রচিত এর গ্রন্থ আমাদের এ মহান সাহাবিরই গল্প শোনাবে।
আরবের তরুণ এক ব্যবসায়ী। ব্যবসা পদ্ধতির নৈপুণ্যতার কারণে বিজ্ঞ-প্রাজ্ঞ ব্যবসায়ীরাও ছিল তার থেকে পিছিয়ে। ব্যবসা কৌশল দেখে অভিভূত হত গোত্রের অন্যান্যরা। হিংসে করত তাকে। অল্প সময়ে উন্নতি করা এই তরুণের সেবারের ব্যবসায়ী সফর ছিল শামদেশে। শামের এক খ্রিষ্টান রাহিবের কাছে শোনেন মক্কায় শ্রেষ্ঠ নবির আবির্ভাবের কথা।
শোনামাত্রই শাম ছেড়ে রওনা দেন মক্কাভূমিতে। জানতে চান মক্কার অস্বাভাবিক কোনো ঘটনার কথা। শোনতে পান, আবদুল্লাহর ছেলে মুহাম্মদ নিজেকে নবি দাবি করেছে এবং আবু বকর তার সত্যায়ন করেছে। ছুটে যান প্রিয় বন্ধু আবু বকরের কাছে। জানতে চান এবং জেনে নেন সবকিছু। সাথে সাথে গ্রহণ করেন ইসলামের অমীয় সুধা।
নম্র-ভদ্র ব্যবসায়ী এই তরুণের ওপর নেমে আসে বিপদের ছায়া। তালহা ইবনু উবাইদিল্লাহ সয়ে যান সবকিছু। অত্যাচার-অনাচার সয়ে দিনাতিপাত করেন কোনঠাসা হয়ে। হিজরত করেন জন্মভূমি ছেড়ে মদিনার পথে। ইসলামের জন্য উজার করে দেন নিজের সবকিছু। অর্থ-সম্পদ বিলিয়ে দেন অকাতরে। উহুদের নির্মম যুদ্ধে নবিজির ঢাল হয়েছিলেন, আঘাতে আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছিল গোটা দেহ। নবিজি তাকে ঘোষণা করেছিল জীবন্ত শহিদ হিসেবে। জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছিলেন তার জীবিত অবস্থাতেই। আল্লাহর এই মহান সৈনিক জঙ্গে জামালের যুদ্ধে সাবায়ি গোত্রের দ্বন্দপ্রিয় জাহান্নামিদের হাতে শহিদ হন। রাদিয়াল্লাহু আনহু ওয়া রাদু আনহু।
মিসরের প্রখ্যাত মুহাক্কিক, লেখক ও সাহিত্যিক শাইখ মুহাম্মদ আশরাফ আল-ওয়াহশ রচিত এর গ্রন্থ আমাদের এ মহান সাহাবিরই গল্প শোনাবে।
কিশোর বালক। সম্ভ্রান্ত হাশিমি গোত্রের আবু তালিবের পুত্র। থাকতেন নবিগৃহে। বুদ্ধিমান চঞ্চল এক বালক তিনি। একদিন নবি এবং নবিপত্নী খাদিজাকে দেখে ফেলেন নামাজ আদায় করতে। দেখে অবাক হন—কী করছেন তারা—প্রশ্ন জাগে। প্রশ্নের কথা খুলে বলেন চাচাতো ভাই নবি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে। জানতে চান কী করছিলেন তারা।
নবিজি তাকে দাওয়াত দেন। দ্বীনে ইলাহির দাওয়াত। গ্রহণ করে নেন আলি। হয়ে যান কিশোরদের মাঝে প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী। বদর, উহুদ, খন্দক, আহজাবের বীর তিনি। যার তরবারির ধার কুপোকাত করত আল্লাহর দুশমনদের। পরাজিত হত কাফিরদের বড় থেকে বড় বীর। তিনি ইলমের শহরের দরোজা আলি ইবনু আবি তালিব।
ইসলামের তৃতীয় খলিফা হজরত উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর পর খিলাফতের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন তিনি। কিন্তু আভ্যন্তরীণ সমস্যা তার বিজয়ের পথে বাধা হয়ে ছিল। খলিফা উসমান কত্যাকাণ্ড হয়ে ওঠে মুসলিমদের মাঝে বিভক্তির কারণ। জঙ্গে জামাল, জঙ্গে সিফফিনের মতো ভয়ানক যুদ্ধও অবলোকন করে মুসলিম বিশ্ব। চার বছরের খিলাফত জীবন শেষে মসজিদে লুকিয়ে থাকা এক ঘাতকের হাতে শাহাদাত বরণ করেন আল্লাহর পথের এই মহাবীর।
মিসরের প্রখ্যাত মুহাক্কিক, লেখক ও সাহিত্যিক শাইখ মুহাম্মদ আশরাফ আল-ওয়াহশ রচিত এর গ্রন্থ আমাদের এ মহান সাহাবিরই গল্প শোনাবে।
আরবের সম্ভ্রান্ত পরিবারের সুদর্শন বালকের নাম উসমান। নির্মল চরিত্রের অধিকারী, শান্ত-শিষ্ট-কোমল মননের অধিকারী। ধন-সম্পদ আর ঐশ্বর্যের কোনো অভাব নেই তার জীবনে। গোত্রের সবাই তাকে শ্রদ্ধা করে, ভালোবাসে। ব্যবসা-বাণিজ্যে সকলের চেয়ে ছিলেন এগিয়ে। একবার তিনি শামে তার ব্যবসায়ী কাফিলার সাথে ছিলেন। স্বপ্ন দেখেন তিনি। ঘুম ভেঙে যায় উসমানের।
জন্মভূমি মক্কার দিকে ঘোড়া হাকান তিনি। জানতে পারেন নবি মুহাম্মদের আত্মপ্রকাশের কথা। বিলম্ব করেন না ইসলাম গ্রহণে। সিদ্দিকে আকবারের মাধ্যমে হয়ে যান প্রথম সারির মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত। তারপর সয়ে যান জুলুম-অত্যাচার। উপহার-স্বরূপ নবিজির প্রিয় কন্যা রুকাইয়ার বিয়ে হয় তার সাথে। বাড়তে থাকে জুলুমের ধারা। হিজরত করেন আবিসিনিয়ায়। একবার, দুইবার। হিজরত করেন মদিনায়।
নরম মননের অধিকারী এই মহান সাহাবি ছিলেন লজ্জাশীলতার মূর্তপ্রতিক। দান-সাদকায় ছিলেন সর্বাগ্রে। জুড়ি ছিল না তার দানের সাথে। যুদ্ধের অস্ত্র থেকে শুরু করে সকল স্থানে ছিল উসমানের দানের অংশ। মনখুলে দান করতেন তিনি। নবি কন্যা রুকাইয়ার মৃত্যুর পর আরেক নবি কন্যা উম্মু কুলসুমের সাথে প্রণয় সূত্রে আবদ্ধ হন।
তিনি ইসলামের তৃতীয় খলিফা। উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর ইনতিকালের পর সর্বসম্মতিক্রমে তিনিই খিলাফতের আসন সৌভাগ্যমণ্ডিত করেন। বিজয়ের ধারা ছড়িয়ে দেন দূর থেকে বহুদূরে। খিলাফতি জীবনের বর্ণাঢ্য আয়োজন শেষে উগ্রদের হাতে শহিদ হন এই মহান খলিফা, দানবীর, জুননুরাইন। রাদিয়াল্লাহু আনহু ওয়া রাদু আনহু। মিসরের প্রখ্যাত মুহাক্কিক, লেখক ও সাহিত্যিক শাইখ মুহাম্মদ আশরাফ আল-ওয়াহশ রচিত এর গ্রন্থ আমাদের এ মহান সাহাবিরই গল্প শোনাবে।
পৃথিবী সৃষ্টির আগে গোটা জগত কেমন ছিল? এর সূচনা কীভাবে হলো? সৃষ্টির শুরুতে আমরা কোথায় ছিলাম? আদম আ.-এর সৃষ্টির আগে পৃথিবীটাই-বা কেমন ছিল?ইমাম ইবনু কাসীর রহ. তাঁর বিখ্যাত ইতিহাস সিরিজ ‘আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ’ গ্রন্থের এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। আলমে আরওয়াহ থেকে দুনিয়া সফরের পূর্ণ ইতিহাস তিনি আলোচনা করেছেন। জনপ্রিয় দাঈ ওমর সুলেইমান এই গ্রন্থের ওপর ভিত্তি করে ৭০ পর্বের একটি সিরিজ বক্তব্য প্রদান করেন। সেই সিরিজ অবলম্বনেই ‘স্টোরি অব বিগিং’ বইটি।সৃষ্টির ইতিহাস প্রসঙ্গে আমরা যা জানি এবং এর বাইরে আরও যেসব বার্তা আছে, সেগুলো ধারাবাহিকভাবে এতে আলোচনা করা হয়েছে। কীভাবে মানুষ, বিশাল পৃথিবী, ভূমণ্ডল, নভোমণ্ডল, ফেরেশতা, জিন প্রাণীকুল সৃষ্টি হলো ইত্যাদি সবিস্তর আলোচনা এসেছে এই বইতে।
প্রফেসর সেলিম টি এস আল-হাসসানি রচিত ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক থেকে প্রকাশিত 1001 Inventions : The Enduring Legacy of Muslim Civilization নামের বিশ্ববিখ্যাত গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ গ্রন্থ— মুসলিম সভ্যতার ১০০১ আবিস্কার। এটি কেবল একটি বই নয়— এক আকাশ ইতিহাসের শেকড়সন্ধানী ইতিহাস সংকলন। হাজার বছরের ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলা মুসলিম সভ্যতার মহানায়ক মুসলিম বিজ্ঞানীদের অবদানের ইতিহাসভিত্তিক আলোচনাগুলো আবৃত হয়েছে দুমলাটের ভেতরকার জমিনে। গোটা বিশ্বের ইতিহাস থেকে মুসলিম সভ্যতার অবদানমুখর অধ্যায়কে মুছে ফেলে এবং সকল শিক্ষা পাঠ্যক্রম থেকে এ আলোচনাকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে— যে সময়টিকে ডার্ক এইজ বা অন্ধকার যুগ হিসেবে পরিচিত করানো হয়েছে; এ গ্রন্থে মূলত সে সময়টিকে গোল্ডেন এইজ বা স্বর্ণযুগ প্রমাণ করার প্রয়াস চলানো হয়েছে। আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তি এবং আবিস্কার-উন্নয়নের নেপথ্যে মুসলিমদের কৃতিত্ব ও অবদানমূলক গৌরবগাথাগুলো একত্রিত করা হয়েছে এ গ্রন্থের পাতায় পাতায়।
সাদা কাগজের কিছু পৃষ্ঠার ওপর কালো কালিতে খচিত নিছক কোনো গ্রন্থ নয় এটি। মুসলিম সভ্যতার মহানায়ক মুসলিম বিজ্ঞানীদের গৌরবগাথা আবিস্কার-অবদানের ইতিহাস সমৃদ্ধ শেকড়সন্ধানী এক প্রামাণ্যগ্রন্থ— মুসলিম সভ্যতার ১০০১ আবিস্কার।
৩৭৬ পৃষ্ঠার বৃহৎ কলেবরের একটি বই। মোট ৮ অধ্যায়ে বিন্যস্ত এ গ্রন্থে এক শতাধিক বিষয়ভিত্তিক শিরোনামে তুলে ধরা হয়েছে অসংখ্য-অগণিত আবিস্কার ও উন্নয়নের গল্প। গ্রন্থটির প্রতিটি লাইনে লাইনে উঠে এসেছে আবিস্কার-অবদানের চেপে রাখা ইতিহাসের ইতিহাস। এছাড়া মুসলিম সভ্যতার উন্নয়নের সময়কাল ও মুসলিম সভ্যতার প্রধান প্রধান অবদানের মানচিত্র শিরোনামের ২টি ব্যতিক্রমধর্মী টাইমলাইনের যুক্ত করার পাশাপাশি সাড়ে ৯ ইঞ্চি বাই সাড়ে ৬ ইঞ্চি সাইজের বইটি যুক্ত করা হয়েছে দূর্লভ ও বিরল হিস্ট্রিক্যাল বিভিন্ন ছবি ও প্রাচীন পাণ্ডুলিপির রেফারেন্স।
বর্তমানে বিশ্বে মুসলমানিত্বের অস্তিত্বের গৌরবোজ্জল ঐতিহাসিক পরিচয় নিয়ে বেঁচে থাকতে, পবিত্র কুরআন ও সহিহ হাদিসগ্রন্থের পর এ গ্রন্থটি সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য হওয়ার দাবি রাখে। কারণ এ গ্রন্থের প্রতিটি লাইন সমৃদ্ধ হয়েছে মুসলিমদের অবদানের গৌরবগাথায়। বংশগত ঐতিহ্য রক্ষার্থে প্রত্যেকটি মুসলিম পরিবার যেমনিভাবে বংশলতিকা সংরক্ষণ করে; মুসলিম সভ্যতার হাজার বছরের অবদানমুখর গৌরবগাথা ইতিহাস নিজেরা জানতে এবং অন্যকে জানাতে তেমনিভাবে এ গ্রন্থটিও প্রত্যেক মুসলিম পরিবারে সংরক্ষিত হওয়া উচিত।
আপনি কেন এই বইটি কিনবেন?
* আপনি কি জানেন— গণিত, ত্রিকোণমিতি, জ্যামিতি, ডিসটিলেশন-পাতন, রসায়ন এবং উড্ডয়ন যন্ত্র বা বিমানের আবিষ্কার কে বা কারা?
* কফি, ঘড়ি, দাবাখেলা, ধাঁধাযন্ত্র, সুগন্ধি, লাইফস্টাইল পণ্য এবং ক্যামেরা আবিষ্কার করেছিলেন কোন কোন মুসলিম বিজ্ঞানী?
* কৃষিবিপ্লব, পানি সরবরাহ, বাঁধ নির্মাণ, বায়ুকল, বস্ত্র ও কাগজ আবিষ্কারসহ মৃৎশিল্প, কাচের শিল্প-কারখানা, মণিমুক্তা-অলংকার ও মুদ্রার প্রচলনে মুসলিম বিজ্ঞানীদের অবদানের ইতিহাসগুলো আপনার জানা আছে কি?
* আপনি কি জানেন— স্থাপত্য, নগর পরিকল্পনা, খিলান, গম্বুজ, মিনার, দুর্গ, গণগোসলখানা, তাঁবু, কাচঘর এবং বাগান ও ঝরনার উন্নয়নসহ হাসপাতাল নির্মাণ, সার্জারি, চিকিৎসা-অস্ত্রোপচারের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও টিকা আবিষ্কার, ঔষধালয় নির্মাণ এবং ভেষজ চিকিৎসার উন্নয়নে মুসলিম সভ্যতার মহানায়ক মুসলিম বিজ্ঞানীদের কি কি অবদান রয়েছে?
* ভূগোল, মানচিত্র অঙ্কন, যুদ্ধাস্ত্র তৈরি, সামাজিক বিজ্ঞান ও অর্থনীতি এবং নৌবিদ্যা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ জোতির্বিদ্যা, মানমন্দির প্রতিষ্ঠা, অ্যাস্ট্রোলেব আবিষ্কার এবং চাঁদ ও নক্ষত্রপুঞ্জ নিরীক্ষণে মুসলিম বিজ্ঞানীদের অবদানের ইতিহাসগুলো আপনার জানা আছে কি?
এসব আবিষ্কার ও উন্নয়নের নেপথ্যে মুসলিম বিজ্ঞানীদের অবদানের শেকড়সন্ধানী ইতিহাস জানতে হাতে তুলে নিন ‘মুসলিম সভ্যতার ১০০১ আবিষ্কার’ গ্রন্থটি। গোটা বিশ্বের ইতিহাস থেকে মুসলিম সভ্যতার অবদানমুখর অধ্যায়কে মুছে ফেলে এবং সকল প্রকারের শিক্ষা পাঠ্যক্রম থেকে এ আলোচনাকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে মুসলিম বিজ্ঞানীদের অবদানমূখর যে সময়টিকে ‘ডার্ক এইজ’ বা ‘অন্ধকার যুগ’ হিসেবে পরিচিত করানো হয়েছে, এ গ্রন্থে মূলত সে সময়টি ‘গোল্ডেন এইজ’ বা ‘স্বর্ণযুগ’ হিসেবে প্রমাণ করা হয়েছে।
সাদা কাগজের কিছু পৃষ্ঠার ওপর কালো কালিতে খচিত নিছক কোনো গ্রন্থ নয় এটি। মুসলিম সভ্যতার মহানায়ক মুসলিম বিজ্ঞানীদের গৌরবগাথা আবিষ্কার-অবদানের শেকড়সন্ধানী ইতিহাস সমৃদ্ধ এক প্রামাণ্যগ্রন্থ— মুসলিম সভ্যতার ১০০১ আবিস্কার।
প্রত্যাবর্তন ” বইটির ফ্ল্যাপের কথাঃ মোহ আর মিথ্যের মধ্য দিয়ে পথ চলতে চলতে একটা সময় আত্নাগুলো নিমজ্জিত হয় অন্ধকারের অতল গহ্বরে। সেই ভয়ার্ত অন্ধকার কূপ থেকে কেউ আলোর দেখা পায়, কেউ পায় না। কেউ নিজের আত্নাকে পরিশুদ্ধ করে নেওয়ার সুযোগ লুফে নেয়, কেউ নিজেকে হারিয়ে ফেলে অতল থেকে অতলে। যারা ফিরে আসে, কেমন হয় তাদের গল্পগুলো? সে রকম একঝাঁক পরিশুদ্ধ আত্নার গল্প নিয়েই
ভোরের শিশির, শীতের কুয়াশা, রাতের নিস্তব্ধতা, পাখিদের কলরব, নদীর অবিরাম বয়ে চলা, সাগরের বুকে উথাল-পাতাল ঢেউ—সবখানে সবকিছু ঠিকঠাক, কেবল আমাদের জীবনের কোথাও যেন এক নীরব ছন্দপতন। সেখানে সুর, তাল আর লয়ের কোনো হিশেব মিলছে না। প্রতিদিন একটা একঘেয়েমি চক্রে কেটে যাচ্ছে জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত। মাঝে মাঝে হাপিত্যেশ লাগে—এভাবে একটা জীবন চলতে পারে? কী পাওয়ার বদলে কী হারাচ্ছি জীবন থেকে? এভাবেই কি ক্ষয়ে যাওয়ার কথা আস্ত একটা জীবন?
প্রশ্নগুলো অনেকের, কিন্তু উত্তরগুলো যেন কোথাও বিন্যস্ত করা নেই। জীবনে একটা বদল প্রয়োজন, একটা পরিবর্তন ভীষণ জরুরি—তা আমরা জানি। কিন্তু কীভাবে শুরু করবো? ঠিক কোথা থেকে যাত্রা করবো নতুন এক দিনের? এইসব প্রশ্নের উত্তর আর জীবনের এক নতুন উপাখ্যান রচনায় ‘এবার ভিন্ন কিছু হোক’ বইটি হতে পারে আপনার নিত্যদিনের সাথি।