রাহে বেলায়াত-এর বিষয়বস্তু পাঁচটি অধ্যায়ে বিভক্ত ছিল। এবার নতুন দুটি অধ্যায় সংযোজন করে গ্রন্থটিকে সাত অধ্যায়ে বিভক্ত করা হয়েছে। সকল অধ্যায়েই কমবেশি পরিবর্তন, সংশোধন বা সংযোজন করা হয়েছে। বিশেষ করে “সালাত ও বেলায়াত” নামে নতুন একটি অধ্যায় তৃতীয় অধ্যায় হিসেবে সংযোজন করা হয়েছে। এ অধ্যায়ে সালাত বিষয়ক ‘রাহে বেলায়াতের’ পূর্ববর্তী সংস্করণের যিকর ও দু‘আ গুলোর সাথে আরো কিছু যিকর ও দু‘আ সংযোজন করা হয়েছে এবং সহীহ হাদীসের আলোকে সালাত আদায়ের মাসনূন পদ্ধতি আলোচনা করা হয়েছে।
“রোগব্যাধি ও ঝাড়ফুঁক” শিরোনামের ষষ্ঠ অধ্যায়টি সম্পূর্ণ নতুন সংযোজন। রোগব্যাধি জীবনের সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত। দীর্ঘদিন যাবত অগণিত পাঠক বিভিন্নভাবে তাদের বিভিন্ন সমস্যা, রোগব্যাধি, বিপদাপদ ইত্যাদির জন্য সুন্নাতসম্মত দু‘আ যিকর ও চিকিৎসা পদ্ধতি জানতে চাচ্ছেন। কারণ তাবীয-কবয ইত্যাদির শিরক সম্পর্কে অনেক আলিমই কথা বলছেন। আমি আমার ‘ইসলামী আকীদা’ গ্রন্থেও এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। পাঠকগণ তাবিয-কবয বর্জন করতে চান। কিন্তু বিকল্প সুন্নাত পদ্ধতি তো তাদের জানতে হবে। আর এজন্যই এ অধ্যায়টি সম্পূর্ণ নতুন সংযোজন করা হলো। মহান আল্লাহর কাছে আমরা সকাতরে দু‘আ করি, তিনি যেন এ সকল সুন্নাত-নির্দেশিত দু‘আ ও ঝাড়ফুঁকের ব্যবহারকারীদেরকে পরিপূর্ণ উপকার ও কল্যাণ প্রদান করেন।…বিস্তারিত জানতে বইটি পড়ুন।
“রাহে বেলায়াত” এর সূচীপত্ৰ:
প্ৰথম অধ্যায়: বেলায়াত, ওসীলাহ ও যিকর
দ্বিতীয় অধ্যায়: বেলায়াতের পথে যিকরের সাথে
তৃতীয় অধ্যায়: সালাত ও বেলায়াত
চতুর্থ অধ্যায়: দৈনন্দিন যিকর ওষীফা
পঞ্চম অধ্যায়: বিষয় সংশ্লিষ্ট যিকর ও দুআ
ষষ্ঠ অধ্যায়: রোগব্যাধি ও ঝাড়ফুক
সপ্তম অধ্যায়: মাজলিসে যিকর ও যিকরের মজলিস
রামাদানকে আমরা কীভাবে কাজে লাগাব—এর বিস্তারিত বিবরণ উঠে এসেছে এ বইয়ে। সিয়াম, সালাত, তারাবি, তিলাওয়াত, ইতিকাফ-সহ রামাদান-সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয়ের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে এতে। নিজেকে পাপমুক্ত ও শুদ্ধ করে তোলার এই মাসটিকে যারা যথাযথভাবে কাজে লাগাতে চায়, এ বইটি তাদের জন্য আদর্শ একটি গাইড-বুকের কাজ করবে, ইনশাআল্লাহ।
এ বইয়ে কঠিন ও জটিল বিষয়গুলোও তুলে ধরা হয়েছে সহজ ও সরলভাবে। উপরন্তু কলমের কালির সঙ্গে হৃদয়ের সবটুকু দরদ যেন ঢেলে দেওয়া হয়েছে বইটির পাতায়-পাতায়। অসামান্য মায়া নিয়ে উম্মাহকে বলা হয়েছে এমন কিছু কথা, যা সচরাচর খুব একটা শোনা যায় না।
আমাদের জীবন খুবই সংক্ষিপ্ত। ছোট্ট এই জীবনে চাইলেও আমরা খুব বেশি আমল করতে পারি না। আর তাই আল্লাহ তাআলা আপন অনুগ্রহে আমাদের জন্য বিপুল সাওয়াব অর্জনের সুযোগ করে দিয়েছেন। আমরা যদি একটু বুদ্ধি খাটিয়ে, একটু ভেবেচিন্তে, বিশেষ কিছু আমল নিয়মিত করতে পারি, তাহলে অল্প সময়ের ব্যবধানে আমাদের নেকির পাল্লা অনেক বেশি ভারী হয়ে উঠবে। হাশরের ময়দানে যখন কেউ কাউকে চিনবে না, তখন এই আমলগুলোই হবে আমাদের একমাত্র সম্বল, জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার অন্যতম অসিলা।
‘জান্নাতিদের আমল’ বইটির পাতায় পাতায় বর্ণিত হয়েছে হাজারো আমলের কথা। যেসব আমলের মাধ্যমে মিলবে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য, রাতে ঘুমিয়ে থেকেও অর্জন করা যাবে তাহাজ্জুদের সাওয়াব, শহিদ না হয়েও লাভ করা যাবে শহিদি মর্যাদা, কবরের আজাব থেকে মিলবে চিরমুক্তি, হাশরের ময়দানে আরশের ছায়া, প্রিয় নবিজির সুপারিশ এবং আরও কত কি!
অল্প আমলে অধিক সাওয়াব পেতে কে না চায়! আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে কার না ইচ্ছে করে! অথচ অধিকাংশ মুসলিমই জানে না, কীভাবে বুদ্ধি খাটিয়ে আমল করতে হয়; কোন সময় কোন আমলগুলো করলে সারারাত ঘুমিয়েও পাওয়া যায় তাহাজ্জুদের সাওয়াব, হজে না গিয়েও মিলে পূর্ণ হজের নেকি, শহিদ না হয়েও লাভ করা যায় শাহাদাতের মর্যাদা।
আল্লাহ তাআলা ইবাদতের ক্ষেত্রে এমনসব সুযোগের ব্যবস্থা করে রেখেছেন, যাতে আমরা সীমিত সময়ে এবং কম পরিশ্রমে নিজেদের আমলনামায় যুক্ত করতে পারি পাহাড়সমান সাওয়াব; পাপের সাগরে যা হবে আমাদের নাজাতের তরি। হাশরের ময়দানে সাওয়াবে ভরপুর আমলনামা দেখে নিজেরাই হয়ে যাব বিস্মিত।
এজন্য জীবনকে আমলের মাধ্যমে পরিপূর্ণ করে তুলতে এবং আল্লাহর আরও বেশি নৈকট্যপ্রাপ্ত বান্দা হতে আমাদের এবারের আয়োজন—‘আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের আমল’।
তাওহীদ আল্লাহর কাছে আমল গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তি। শিরক তাওহীদের সম্পূর্ণ বিপরীত। শিরক সকল আমলকে বিনষ্ট করে দেয়।
তাওহীদের মাধ্যমে আমল গ্রহণযোগ্য হয়, আর শিরক আমলকে ধ্বংস করে দেয়। তাই তাওহীদ ও শিরক সম্পর্কে জানতে হবে ।
আর এ জানার উৎস হবে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ ।
আল্লাহর দ্বীনের মূল ভিত্তি তাওহীদ । তাওহীদ মানে আল্লাহকে রব ও ইলাহ্ হিসেবে একক মর্যাদা দেয়া । তাওহীদের বিপরীত শিরক ।
শিরক হচ্ছে যা আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট এবং শুধু মাত্র আল্লাহরই প্রাপ্য, তাতে অন্য কাউকে অংশীদার বানানো ।
শিরক 'কে কুরআনে 'যুল্ম আযীম' তথা মহা অবিচার বলা হযে়ছে। শিরক অমার্জনীয় অপরাধ । শিরক সকল নেক আমল নষ্ট করে দেয়।
আল্লাহ মানুষের হেদাযে়তের জন্য যুগে যুগে নবী—রাসূল পাঠিযে়ছেন। সকল নবী— রাসূলের দাওয়াতের মূল বিষয় ছিল তাওহীদ ।
ঈমানকে নির্ভেজাল তাওহীদের ওপর টিকিযে় রাখার জন্য এবং শিরক থেকে বাচার জন্য প্রতেক মুমিনেরই তাওহীদ ও শিরক সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকা প্রযে়াজন । এ ধারণা থাকলেই সে জানতে পারবে তাওহীদ কী? তাওহীদের দাবি কী ? শিরক কী ? শিরকের পরিণতি কী ? আর এ সব জানতে পারলেই তার বাস্তব জীবনে ঈমানের প্রভাব পরিলক্ষিত হবে । সে আল্লাহর প্রভূত্ব ছাড়া আর কারো প্রভূত্ব মানবে না।
আল্লাহর দাসত্ব ও গোলামী ছাড়া আর কারো দাসত্ব ও গোলামী করবে না। আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ছাড়া আর কারো সার্বভৌমত্ব মানবে না।
আল্লাহর ক্ষমতায় কাউকে অংশীদার বানাবে না। সকল ধরনের তাগতকে সে বর্জন করবে । সকল ধরনের শিরককে সে প্রত্যাখ্যান করবে।
'তাওহীদ ও শিরক' বইটিতে তাওহীদের পরিচয়, তাওহীদের মর্যাদা, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নানা আঙ্গিকে তাওহীদ চর্চা, মানব জীবনে তাওহীদের প্রভাব এবং শিরকের পরিচয়, কারণ, পরিণাম, আমাদের সমাজে প্রচলিত শিরক ইত্যাদি বিষযে়র আলোচনা করা হযে়ছে।
প্রতিটি প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে । আর অবশ্যই কিয়ামতের দিন তাদের প্রতিদান পরিপূর্ণভাবে দেয়া হবে; সুতরাং যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সে-ই সফলতা পাবে, আর দুনিয়ার জীবন শুধু ধোঁকার সামগ্রী ।”
-সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৮৫
যে কোনো বই নিবিড় মনে পড়ার সময় প্রিয় পাঠক-পাঠিকার মনে কিছু প্রশ্নমালা উঁকি দেয়, পাশাপাশি তারা কিছু করণীয় বিষয় তুলে আনার চেষ্টা করেন । এ সবের প্রতি লক্ষ্য রেখেই বইটির -
• প্রথম অধ্যায়ে ‘মানব পরিচয়' শিরোনামে মানুষের সৃষ্টি-রহস্য, মানব সৃষ্টির লক্ষ্য, মানব জীবনের সফলতা ও ব্যর্থতা সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে।
• দ্বিতীয় অধ্যায়ে ‘মৃত্যুর বিবরণ’,
• তৃতীয় অধ্যায়ে ‘গোসল, কাফন, জানাযার নামায ও দাফন' সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ অনেক মাসআলা-মাসায়েল বিশুদ্ধ দলিলের আলোকে বর্ণনা করা হয়েছে ।
• চতুর্থ অধ্যায়ে ‘কবরের বিবরণ’, পঞ্চম অধ্যায়ে “কিছু ভ্রান্তির অপনোদন' শিরোনামে কিছু জিজ্ঞাসার জবাব এবং
• ষষ্ঠ অধ্যায়ে ‘কিছু পাথেয়' শিরোনামে আমাদের করণীয় ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে ।
ইতোপূর্বে ”পৃথিবী আমার আসল ঠিকানা নয়” বইটির দুইটি সংস্করণ প্রকাশ করা হয়েছে । ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তায় আলোচ্য বইটির বিন্যাস, উপস্থাপনার ধরন, মান ও নির্ভরযোগ্যতা সুধী পাঠক সহজেই উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন । বইটি দ্বারা পাঠক মহল উপকৃত হলেই আমাদের প্রচেষ্টা সার্থক হয়েছে বলে মনে করবো ।
আল্লাহ মুমিনদেরকে “হে আমার বান্দাগণ!' বলে সম্বোধন করেছেন । তাই আল্লাহর বান্দা হওয়া সৌভাগ্যের ব্যাপার । শুধু ঈমান আনলেই আল্লার বান্দা হওয়া যায় না। আল্লার বান্দা হওয়ার জন্য প্রয়োজন বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলির। সে গুণ ও বৈশিষ্ট্যগুলো বিচ্ছিন্-বিক্ষিপ্তভাবে বেশ কয়েকটি বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করা হয়েছে । বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলির আলোচনা শুরু করা হয়েছে, ইবাদুর রাহমান- রাহমানের বান্দাগণ বলে। এখানে রাহমানের বান্দাদের যে গুণগুলোর উল্লেখ করা হয়েছে, দাওয়াত ইলাল্লাহর পথের কর্মী হিসেবে এ গুণগুলো আমাদের অর্জন করতে হবে।
রাহমানের বান্দাদের গুণাবলি বইটি কোনো গতানুগতিক বই নয়। এ বইটি সুরা আল ফোরকানের শেষাংশের ১৫টি আয়াতকে অবলম্বন করে লেখা হয়েছে। এ আয়াতগুলোতে আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদেরকে ইবাদুর রাহমান-রাহমানের বান্দাগণ হিসাবে পরিচয় দিয়ে তাদের গুণাবলি উল্লেখ করেছেন। লেখক এ গুণ ও বৈশিষ্ট্যগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছেন।
আমাদের বিশ্বাস যারা এসব গুণ ও বৈশিষ্ট্য অর্জন করে রাহমানের বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত হতে চান, তারা এই বইটি থেকে উপকৃত হবেন। ইনশাআল্লাহ।
স্বপ্ন-ষড়যন্ত্র-দাসত্ব-দুর্ভিক্ষ-রাজত্ব—কী দারুণ এক সত্য আখ্যান! বাধা-বিপত্তির দেয়াল পেরিয়ে মঞ্জিলে পৌঁছার এই অসাধারণ গল্প কোটি হৃদয়কে উজ্জীবিত করছে শত সহস্র বছর ধরে। হতাশার পাহাড় মাড়িয়ে আশার আলো জ্বালিয়ে দেওয়ার এ গল্প আজকের প্রজন্মকেও স্পর্শ করে খুব। লালসার সমুদ্রে এ যেন পবিত্র একফোঁটা স্বচ্ছ জলবিন্দু! ইউসুফ আলাইহিস সালাম আমাদের বিজয়ী মহানায়ক, বিশ্বাসীদের নকিব। সূরা ইউসুফ আমাদের প্রত্যাশিত জীবনের এক অনন্য রিফ্লেকশন।স্বপ্ন-ষড়যন্ত্র-দাসত্ব-দুর্ভিক্ষ-রাজত্ব—কী দারুণ এক সত্য আখ্যান! বাধা-বিপত্তির দেয়াল পেরিয়ে মঞ্জিলে পৌঁছার এই অসাধারণ গল্প কোটি হৃদয়কে উজ্জীবিত করছে শত সহস্র বছর ধরে। হতাশার পাহাড় মাড়িয়ে আশার আলো জ্বালিয়ে দেওয়ার এ গল্প আজকের প্রজন্মকেও স্পর্শ করে খুব। লালসার সমুদ্রে এ যেন পবিত্র একফোঁটা স্বচ্ছ জলবিন্দু! ইউসুফ আলাইহিস সালাম আমাদের বিজয়ী মহানায়ক, বিশ্বাসীদের নকিব। সূরা ইউসুফ আমাদের প্রত্যাশিত জীবনের এক অনন্য রিফ্লেকশন।
অস্থিতিশীল বাজার। দ্রব্য-মূল্যের উর্ধ্বগতি। ঝুঁকিতে আমদানি-রপ্তানি খাত। ভেঙে পড়ছে ব্যাংকিং সিস্টেম। বাড়ছে ঋণখেলাপির দায়। মূল্যস্ফীতিতে টালমাটাল বিশ্ব। অজানা শংকা বিরাজমান ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে। দূর্ভিক্ষের অশনি সংকেতে পেরেশান জন-সাধারণ। এর কারণ কী? কী কারণে ঘটছে এমনটা? এসব সমস্যার সমাধান কোথায়?
যে যাই বলুক বা যত ব্যাখ্যাই করুন; ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি সম্পর্কিত এসব সমস্যার সমাধান একটাই—মানবতার নবি হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন ধারা ও জীবনার্দশের অনুকরণ ও বাস্তাবায়ন। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনের সুরা আহজাবের ২১ নং আয়াতে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের জন্য রাসুলের জীবনে রয়েছে অনুকরণীয় সুন্দরতম আদর্শ।’ সুতরাং ব্যবসা-বাণিজ্যগত এই ক্রাইসিস, অর্থনৈতিক মন্দা এবং নৈতিক ও মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধে মহানবি হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্দরতম আদর্শ অনুসরণের কোনো বিকল্প নেই।
ব্যবসা-বাণিজ্য ও পেশা-ক্যারিয়ারে সফল হতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ব্যবসায়িক জীবনের ইতিহাস ও দিক-নির্দেশনার অনবদ্য একটি গাইডলাইনমূলক বই—‘দ্য গ্রেটেস্ট অন্ট্রাপ্রেনর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।’ বইটির মূল বৈশিষ্ট্য হলো—বর্তমান সময়ের সফল মানুষরা ব্যবসা ও আত্মউন্নয়নের জন্য যেসব গুণ-অভ্যাস ও ব্যবস্থাপনা-কৌশল অনুসরণ করার কথা বলেন; সেসব গুণ-অভ্যাস ও ব্যবস্থাপনা-কৌশলকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনদর্শনের আলোকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। পাশাপাশি আধুনিক ব্যবসা উন্নয়নে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামের কর্ম, আদর্শ ও দিক-নির্দেশনাসহ তাঁর রণনীতির প্রয়োগযোগ্যতা প্রমাণ করা হয়েছে।
ব্যবসাজীবনে আপনি কি সফল হতে চান? শ্রম বিনিময় মাধ্যমে স্বার্থক একটি জীবন গড়তে চান? সফল একজন উদ্যোক্তা হিসেবে সফল একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা-ই কি আপনার জীবনের একমাত্র স্বপ্ন? সর্বপরি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনার্দশের আলোকে সুন্দর একটি ক্যারিয়ার গড়ে আপনি কি সফল মানুষ হতে চান? তাহলে এই বই হবে আপনার জন্য সময়ের সেরা উপহার।"
মুসলিম হিসেবে হালাল-হারামের ব্যাপারে আমাদের সর্বোচ্চ সতর্কতা আবশ্যক। অবশ্য কিছু বিষয়ের হালাল-হারাম হওয়া নিয়ে কখনো কখনো বেশ দ্বন্দ্বে পড়ে যাই আমরা। এটা হালাল হলে ওটা হারাম কেন, এভাবে হারাম হলে ওভাবে হালাল কেন—এ জাতীয় নানা প্রশ্ন আমাদের মাথায় ঘুরতে থাকে। দিশেহারা হয়ে পড়ি আমরা। অথচ কোনো কিছুর হালাল কিংবা হারাম সাব্যস্ত হওয়ার যে সামান্য কিছু মূলনীতি রয়েছে, সেগুলো জানা থাকলে এ অবস্থা থেকে অনেকাংশেই বেঁচে থাকা সম্ভব।
একজন মুসলিমের জন্য কোন কাজটি হালাল আর কোনটি হারাম, কোন কাজ এক জায়গায় জায়িয হলেও অন্য জায়গায় বা অন্য সময়ে নাজায়িয, কোনো কাজ জায়িয এবং নাজায়িয হওয়ার কারণগুলোই বা কী? ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক-জীবনঘনিষ্ঠ এমন অসংখ্য বিষয়ের বাস্তবধর্মী আলোচনা নিয়ে ড. ইউসুফ আল-কারযাবি রাহিমাহুল্লাহর বিশ্বজুড়ে সাড়াজাগানো গ্রন্থটি প্রকাশিত হলো ‘হালাল-হারামের বিধান’ নামে।
বর্তমান সময়টা ফিতনার। এ সময়ে আমাদের আশেপাশে রয়েছে ভয়াবহ অসংখ্য ফিতনা।
কখনো কখনো আমাদের কাছে সেই ফিতনাগুলো আসে ভিন্ন ভিন্ন আকর্ষণীয় মোড়কে। যার মধ্যে লুকিয়ে থাকে শির্ক-কুফরের মতো ভয়ংকর বিষয়। তবে যাদের অন্তরে সামান্যতম আল্লাহর ভয় আছে, দ্বীন-ইসলামের প্রতি আকর্ষণ আছে, তাদেরকে সহজেই সুস্পষ্ট শিরক-কুফরে লিপ্ত করানো যায় না। তাই আল্লাহর দুশমনরা সময়ে সময়ে ভিন্ন পথে, ভিন্ন নামে মুসলমানদেরকে বিপথগামী করে। দ্বীন-ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করে। তেমনই একটি ভয়াবহ ফিতনা হলো—খেলাধুলা ও বিনোদন। খেলাধুলা ও বিনোদনের নামে মুসলমানদের দিল থেকে দ্বীনের ভালোবাসা, রাসূল g-এর ভালোবাসা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে আমাদের হৃদয় থেকে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানোর ভয়, কবরের আযাবের ভয়, জাহান্নামের ভয় সবকিছুই হারিয়ে গেছে।
আমরা যদি বর্তমান তরুণ প্রজন্মের দিকে তাকাই, তা হলে দেখব আমরা বিনোদন ও খেলাধুলার এমন এক জগতে প্রবেশ করেছি, যেখান থেকে উঠে আসা অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখনই যদি আমরা আমাদের ফিরিয়ে না রাখি, এই অন্ধকার জগৎ থেকে বেরিয়ে আলোর পথে না আসি, তা হলে হয়তো অদূর ভবিষ্যতে আমরাই বেরিয়ে যাব ইসলাম থেকে, ইসলামই হবে আমাদের কাছে সবচেয়ে অপছন্দের!
তাই আসুন, আগে থেকেই আমরা সতর্ক হই। ইসলাম মেনে জীবনযাপন করি।
প্রায় অসম্ভব ও রুদ্ধশ্বাস বহুবিধ প্রক্রিয়া ইসলামি খিলাফতের পরিবেশকে গুমোট করে রেখেছে। নানা ঝঞ্ঝাট, নানা বিভ্রাট, নানা ফিতনা ও সমস্যায় আকীর্ণ পৃথিবীতে কে কার দায়িত্ব নেয়, কে কাকে মান্যতা দেয়—তার কোনো ইয়ত্তা নেই। কেন্দ্র আর কেন্দ্রে নেই, উৎস তার উৎসে নেই—তা ছেয়ে গেছে ও ছড়িয়ে পড়েছে, তা ঝুলে গেছে ও ঢলে পড়েছে—সভ্যতা থেকে অসভ্যতার দিকে, শীতল-শান্তি থেকে চাঞ্চল্যের দিকে, ঈমান থেকে কুফর ও মুনাফিকির দিকে।
ইসলামি খিলাফতের প্রসিদ্ধ নগরীগুলোর পরস্পর রশি টানাটানিতে তাদের মূলসূত্রগুলোই ছিঁড়েখুঁড়ে ফালি ফালি হয়ে গেছে। কাবা শরিফ ও মসজিদে নববিতে এসে বাজামাআত দুরাকাআত নামাজ আদায়ের জন্য এখন আর কারও মনের ভেতর তেমন কোনো উদ্দীপনা কিংবা চৈতন্য কাজ করে না; ইসলামি শরিয়ার আদল ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য কোনো কোশেশ কারও মধ্যে পরিলক্ষিত হয় না। সবাই সব জায়গায় প্রত্যেকের নিজস্ব মতামত, অভিরুচি ও দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে।
ইতিহাসের এমনই এক যুগসন্ধিক্ষণে এসে খিলাফতের আসনে অধিষ্ঠিত হন ইলমে নববি তথা নবুওয়তি জ্ঞানের রাজতোরণ-খ্যাত সাহসী বীর সিপাহসালার, নবি-তনয়া ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু আনহার প্রিয় জওহার, আমিরুল মুমিনিন আলি ইবনু আবি তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহু।
প্রিয় পাঠক, এই গ্রন্থে তার ব্যক্তিজীবন, রাষ্ট্রীয় জীবন ও খিলাফতি জীবনের সকল খুঁটিনাটি বিষয় বিধৃত হয়েছে। এবং লেখকের আশ্চর্য জাদুকরি কলমে তার সামষ্টিক জীবনচরিত হয়ে গেছে এক অদ্ভুত সম্মোহনী ও সত্যভুক বিশদপুরাণ উপাখ্যান।
কেউ জানে না কার ভবিতব্য কীভাবে কতটা নিরুপদ্রবে পার হবে। কতটা দুঃখ-দুর্দশা, ব্যথা-বেদনা ও অপরিসীম মানস-যন্ত্রণা মানুষকে ভোগ করতে হবে। তবু অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা একটুখানি তলিয়ে দেখে গভীরভাবে ভাবতে গেলেই গা শিউরে ওঠে। মানসজগৎ বাষ্পীভূত হয়ে যায়।
যে-সকল আলোকিত মানুষ প্রিয়নবি হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সরাসরি সান্নিধ্য লাভ করেছেন, তার ওহিপূর্ণ জ্যোতির্ময় হাত ধরে ঈমানের আলোয় আলোকিত হয়েছেন, তাদের কিছু মানুষ তার ইন্তিকালের পর অদ্ভুতরূপে পালটে যায়। দিকে দিকে জাহিলিয়াতের যুগের মতো আবারও আরব্য গোত্রপ্রীতিবোধ, আভিজাত্য-ভাব, অহেতু অহংকার ও মিথ্যাচার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
যে ইসলাম মানুষকে সবচেয়ে সাচ্চা ও সত্যাশ্রয়ী রূপে গড়ে তোলে, সেই মানুষই আবার ইসলামকে লঙ্ঘন করতে কুণ্ঠাবোধ করে না। অতি তুচ্ছ প্রয়োজনে মানুষ হত্যা করতেও কসুর করে না। তা যদি হয় আবার ইসলামের তৃতীয় খলিফা, আমিরুল মুমিনিন উসমান ইবনু আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহুর মতো ইসলামের জলিলুল কদর সাহাবি, নবিজির আদরের দুই মেয়ের জামাতা তথা কাতিবে ওহিকে হত্যা করা।
এই গ্রন্থে উসমান ইবনু আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফতকাল ও তার শাসনব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে আলোকপাত করা হয়েছে। নির্মোহভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে তার সময়ের পরিবেশ-প্রতিবেশ তথা চতুষ্কোণকে। প্রিয় পাঠক, তার অনুষঙ্গে এখানে এমন কিছু নতুন প্রশ্ন ও নতুন উত্তর খুঁজে পাবেন, যা হয়তো আপনি সত্যিই আগে এমনভাবে এতটা মনোনিবেশ নিয়ে অনুধাবন করেননি। এটিই এই গ্রন্থের সপ্রাণ সার্থক স্বাতন্ত্র্য।
যার কথা ওহি তথা প্রত্যাদেশের মতো সত্য শোনা যায়, যার আশঙ্কা বাস্তবতার নিরিখে অবিকল প্রতিফলিত হয়, যার ইশারায় অর্থাৎ ভ্রূভঙ্গির সঙ্গে মনোভঙ্গির অদ্ভুত এক মেলবন্ধন ঘটে, যার সাহসে দৃঢ়তায় শৌর্যে ও বীরত্বে যাবতীয় অসত্য অন্যায় সংশয় ও অন্ধকার দূরীভূত হয়ে যায়, তিনি আরব-শার্দূল বজ্রকণ্ঠ সিংহপুরুষ আমিরুল মুমিনিন হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু।
উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফতকাল ছিল ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে সুন্দর, সবচেয়ে প্রসারণশীল, সবচেয়ে সমৃদ্ধ খিলাফতকাল। তার শাসনকালেই জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর মাধ্যমে দিকে দিকে ইসলামের সর্বাধিক বিকাশ ঘটে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়। শাসনব্যবস্থা শৃঙ্খলা ফিরে পায়। হিজরি সনের প্রবর্তন ঘটে। ব্যক্তি থেকে সমাজে রাষ্ট্রে সুশাসন ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা পায়।
এই গ্রন্থে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফতকাল ও তার শাসনব্যবস্থার সামগ্রিক বিষয়াবলি নতুনরূপে আধুনিক পর্যবেক্ষণী দৃষ্টি দিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। প্রিয় পাঠক, আসুন, এই তথ্যপূর্ণ ও বিশ্লেষণী গ্রন্থটি পাঠের মধ্য দিয়ে আমরা কবির ভাষায় পুনর্বার উচ্চারণ করি
আজকে উমর-পন্থি পথীর দিকে দিকে প্রয়োজন পিঠে বোঝা নিয়ে পাড়ি দেবে যারা প্রান্তর প্রাণপণ;
উষর রাতের অনাবাদী মাঠে ফলাবে ফসল যারা, দিক-দিগন্তে তাদেরে খুঁজিয়া ফিরিছে সর্বহারা!
সত্যের সঙ্গে যার শুভযোগ, আমলে সুকর্মে যার সৌকর্য, ন্যায়ের প্রশ্নে যিনি উৎকণ্ঠ এবং গোটা মুসলিম উম্মাহর মধ্যে প্রিয়নবি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বহুল কাঙ্ক্ষিত দারসে সহবতে যার প্রকৃত উৎকর্ষ ও সমুন্নতি, তিনি আর কেউ নন, তিনি চির কোমলপ্রাণ চির বিনম্রজন, ঈমানদীপ্ত চির নিবেদিত চিত্ত, নবিপ্রেমের ফোয়ারা, হিজরতের পথের সাথি, ইসলামের ইতিহাসের প্রথম খলিফা, খলিফাতুল মুসলিমিন আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু। ইসলামধর্ম যাদের ত্যাগে তিতিক্ষায় ও কুরবানির দৌলতে আজ অবিকৃত, বিশুদ্ধ ও মূলানুগ চারিত্র্য নিয়ে সারাবিশ্বে সমাদৃতি লাভ করেছে, একা আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর অবদান তাদের সবার শীর্ষে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওফাতের পর উম্মাহ যখন পথভ্রান্ত ও দিশেহারা, তখন তিনিই অবিচল অন্তরে ঐশী রোশনাই হাতে সকলকে পথ দেখালেন। চির অন্ধকারের দিকে ধাবিত উম্মাহকে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের চির জীবন্ত ও শাশ্বত দ্বীনের পথে ফিরিয়ে আনলেন। প্রিয় পাঠক, মুসলিম উম্মাহর গুরুদায়িত্ব নিয়ে তিনি খিলাফতের আসনে কীভাবে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন, ইরতিদাদের ফিতনাকে কীভাবে সামলে ছিলেন, বেপথু মানুষকে কীভাবে আদরে-সমাদরে, শাসনে-তোষণে, সহজ ও কঠোরতায় আগলে রেখেছিলেন, সর্বোপরি সমূহ প্রতিকূল পরিবেশেও ইসলামের পতাকাকে কীভাবে সর্বোচ্চে উড্ডীন রেখেছিলেন, তার বিশদ ও সবিস্তার আলোচনা আপনি এই গ্রন্থের পাতায় পাতায় অতি মনোজ্ঞ ও প্রাঞ্জল ভাষায় স্বভাবসম্মত ভঙ্গিমায় সদুত্তরযুক্ত কৌতূহলে অনায়াসে খুঁজে পাবেন।
খিলাফতে রাশিদা অর্থাৎ বিশ্বমানবতার একটি আলোকদীপ্ত কাফিলা—যারা শেষ নবি মুহাম্মদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের তিরোধানের পর ইসলাম-ধর্মের হাল ধরেন। ইসলামের তীব্র জ্যোতির্ময় বিচ্ছুরিত আলোকচ্ছটা সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দেন। নবিজির আনীত সাচ্চা ওহিপূর্ণ ধর্মে কোনোরূপ বিকৃতি হতে দেননি। ইসলামের পাঁচ স্তম্ভ—কালিমা, নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাতের বিধানকে অবিকল অক্ষুণ্ন রেখে শান্তিপ্রিয় ইসলামি-মানবতাবোধকে একচুলও বিচ্যুত হতে দেননি। যারা বিনয়ে নম্রকণ্ঠ। বিদ্রোহে উচ্চশির। দান-অনুদানে মুক্তহস্ত। চিন্তাদর্শনে স্বচ্ছ ও সম্ভ্রমশীল। গোটা মুসলিম উম্মাহ যাদের মহত্তম কর্ম-অনুপ্রেরণায় দীপিত-উজ্জীবিত। এমনই ছিলেন ইসলামের মহান চার খলিফা তথা আবু বকর সিদ্দিক, উমর ইবনুল খাত্তাব, উসমান ইবনু আফফান ও আলি ইবনু আবি তালিব—রাদিয়াল্লাহু আনহুম। নিখাদ, নিখুঁত ও নিষ্কলুষ চরিত্রের অধিকারী পৃথিবীর সেরা মানুষ। তারা যুদ্ধ করেছেন। সন্ধি করেছেন। তরজা করেছেন। রাষ্ট্রপরিচালনা করেছেন। ব্যক্তি ও সমষ্টিগত জীবনে ইসলামের সর্বোত্তম সুন্দর আদর্শটি বেছে নিয়ে তার পর সেই অনুপাতে পথ চলেছেন। সত্য ও ন্যায়ের প্রশ্নে চির আপসহীন এই চার-সাহাবির জীবনে এমন কোনো ঘটনা নেই, যাতে পরবর্তী কালের উম্মাহর জন্য শিক্ষা ও তারবিয়ত নেই। তাদের সকল ঘটনা ও আচরিত জীবন থেকে, চিন্তা ও অনুভাবনা থেকে সবক হাসিল করেই মুসলিম উম্মাহ সঠিক পথের দিশা পান।
‘ইসলাম, সে তো পরশ-মানিক, তাকে কে পেয়েছে খুঁজি<br> পরশে তাহার সোনা হল যারা, তাদেরেই মোরা বুঝি।
অথবা আসহাবি কাননুজুম... অর্থাৎ আমার সাহাবিগণ নক্ষত্রতুল্য। যারই অনুসরণ করা হোক, হিদায়েতপ্রাপ্ত হবে। এমন হিদায়েতপ্রাপ্ত, আলোকময় ও সোনার মানুষদের সর্দার ও নেতৃস্থানীয় চার সাহাবির বিশ্বস্ত ও বিশদ জীবনী নিরপেক্ষভাবে জানতে হলে বাংলা ভাষায় এই বই পাঠের বিকল্প নেই। প্রিয় পাঠক, সত্যিই বেহেশতি সওগাতের এ এক আশ্চর্য অনুপম অপূর্ব জীবনগাথা বা জীয়নকাঠি!
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দৈনন্দিন জীবন কীভাবে কাটত, বাৎসরিক জীবন কীভাবে কাটত, ৩৬৫ দিন তিনি কীভাবে অতিবাহিত করতেন, বিশেষায়িত করতেন কোন দিনগুলোকে, কোন দিনগুলোতে আনন্দ উদযাপন করতেন, কীভাবে করতেন, মাধ্যম কী হত, তার পরিমাণ কতটুকু হত—এর সবই পূর্ণাঙ্গ একটি জীবনের জন্য আবশ্যকীয়।
রাসুলুল্লাহর জীবনের ৩৬৫ দিনকে তুলে আনা হয়েছে এ বইটিতে। একজন মুমিনের জীবনের গোটা সময়টা স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে পরিচালনার একটি নকশা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটিতে। সে অনুযায়ী জীবন গড়ে তুলতে পারলে, নবিজির মতো করে বছরের ৩৬৫ দিন অতিবাহিত করতে পারলেই তা হবে একটি পূর্ণাঙ্গ মুমিনচরিত।
বইটিকে আমরা দুটি ভাগে বিভক্ত করেছি। প্রথম অধ্যায়ে দৈনন্দিন জীবনে নবিজির দিনলিপির অনুকূলে অর্থাৎ সারাদিনে নবিজির সুন্নাত অনুযায়ী মুমিনের দিনযাপন কেমন হবে তা তুলে ধরা হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে বারো মাস যাপনের জন্য আমাদের করণীয়-বর্জনীয় ও আমল কী, তার সাথে সম্পৃক্ত নানান বিষয়াদি, শরিয়তের বিভিন্ন জরুরি রুকন, নবিজির সাধারণ আচরণ, চালচলন, ব্যক্তিত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরা হয়েছে এ বইটিতে।
উম্মতের বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু। শামের প্রতিটি স্থান যার বীরত্ব এবং বিজয়ের সাক্ষী। মক্কার অলি-গলি যার উত্তম আখলাক-শিষ্টাচার এবং দক্ষতা-প্রাজ্ঞতার সাক্ষী; ইসলামের সত্য-সৌন্দর্য তাকে মুগ্ধ করেছিল প্রথমদিকেই। হজরত আবু বকরের মাধ্যমে তিনি ইসলামের সৌন্দর্যকে নিজের জীবনের জন্য নির্ধারণ করেছিলেন।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৃত্যুর পর বনু সাইদার বৈঠকে আবু বকর তাকে খলিফা হিসেবে পছন্দ করেছিলেন। কিন্তু নবিজির গুহাগহ্বরের বন্ধুর উপস্থিতিতে এই অবস্থানের জন্য তিনি নিজেকে যোগ্য মনে করলেন না। যুদ্ধের বীর ময়দানে ছুটে গেলেন। একের পর এক দখল করলেন কাফিরদের ভূমি। উড্ডীন করলেন ইসলামের পতাকা।
হজরত উমরের খিলাফতকালে প্লেগ মহামারি শামকে আক্রান্ত করল। উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকে রক্ষার জন্য মদিনায় ডেকে পাঠালেন। কিন্তু শাহাদাতের আকাঙ্ক্ষী শামবিজেতা এই মহাবীর নিজ সৈন্যদের রেখে মদিনা যেতে অনাগ্রহ প্রকাশ করলেন এবং ভয়ঙ্কর মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে জীবন হারালেন। হজরত উমর মৃত্যুকালে বলেছিলেন, আজ যদি আবু উবাইদা থাকত, আমি তাকেই আমার পরবর্তী খলিফা নির্বাচন করতাম। রাদিয়াল্লাহু আনহু ওয়া রাদু আনহু।
মিসরের প্রখ্যাত মুহাক্কিক, লেখক ও সাহিত্যিক শাইখ মুহাম্মদ আশরাফ আল-ওয়াহশ রচিত এর গ্রন্থ আমাদের এ মহান সাহাবিরই গল্প শোনাবে।
জাইদ ইবনু আমর ইবনু নুফাইল জাইদ রাদিয়াল্লাহু আনহুর পিতা। জাহিলিযুগে যিনি আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসী ছিলেন এবং নবিজির জীবদ্দশায়, নবুওয়াতের পূর্বে তিনি এই বিশ্বাসের ওপরই মৃত্যুবরণ করেন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার বিষয়ে জান্নাতের ঘোষণা করেছেন।
সাইদ ইবনু জাইদ রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন প্রথম সারির মুসলিম। তিনি হজরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর বোনজামাই ছিলেন। হজরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর বোন ফাতিমা; যিনি উমরের মুসলিম হওয়ার কারণ ছিলেন, তিনি সাইদ ইবনু জাইদের স্ত্রী ছিলেন এবং তারা উভয়ে একত্রে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। দুনিয়াবিমুখ এই বাদশাহ সবসময় দুনিয়াকেএড়িয়ে চলতেন। জিহাদের ময়দানে ছুটে চলতেন। এক জিহাদের ময়দান থেকে অন্য ময়দানে ছুটে যেতেন। শাসন থেকে হাত গুটিয়ে রাখতেন। বদর থেকে আরম্ভ করে জীবনের পুরোটা সময় কাটিয়ে তিনি দেন জিহাদের ময়দানে; বীরের বেশে।
মিসরের প্রখ্যাত মুহাক্কিক, লেখক ও সাহিত্যিক শাইখ মুহাম্মদ আশরাফ আল-ওয়াহশ রচিত এর গ্রন্থ আমাদের এ মহান সাহাবিরই গল্প শোনাবে।
জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্তদের মাঝে অন্যতম একজন। জ্ঞান, গবেষণা, চিন্তা-ভাবনায় ছিলেন অত্যন্ত সূক্ষ্মদর্শী। আবয়ব ছিল আকর্ষণীয়। নৈতিকতা, মহত্বে ছিলেন দৃষ্টি আকর্ষক। সবমিলিয়ে তিনি ছিলেন সমাজের সকলের কাছে গ্রহণীয় ব্যক্তিত্ব। সকলের শ্রদ্ধার পাত্র। সূক্ষ্মদর্শী, নম্র-ভদ্র আবদুর রহমান ইবনু আউফ লড়াইয়ের ময়দানে কোমল থাকতেন না, হয়ে উঠতেন ময়দানের বীর। শত্রুদের সারি ভেদ করতেন, ব্যুহ ভেঙে দিতেন, ছত্রভঙ্গ করে দিতেন।
হজরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু মৃত্যুর সময় ছয় সদস্যের একটি শুরা কমিটি গঠন করেন। তাদের থেকে একজনকে খলিফা মনোনিত করার অসিয়ত করেন। হজরত আবদুর রহমান ইবনু আউফ ছিলেন সেই কমিটির একজন। তিনি নিজের ক্ষমতার দাবি প্রত্যাহার করে উম্মতের ফায়দার লক্ষ্যে খলিফা নির্বাচনের ভার নিজ কাঁধে তুলে নেন এবং উম্মতের সম্মতিক্রমে হজরত উসমান ইবনু আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহুকে খলিফা নির্বাচিত করেন।
ন্যায়-নিষ্ঠা আর নম্রতায় ভরপুর এই মহান সাহাবি ছিলেন দানবীর এবং দয়ালু। উম্মাহাতুল মুমিনিনের খাদিম। জীবনের পঁচাত্তরটি বসন্ত শেষে বত্রিশ হিজরি সনে তিনি রফিকে আলার দিকে নিজ যাত্রাপথ বেছে নেন। রাদিয়াল্লাহু আনহু ওয়া রাদু আনহু। মিসরের প্রখ্যাত মুহাক্কিক, লেখক ও সাহিত্যিক শাইখ মুহাম্মদ আশরাফ আল-ওয়াহশ রচিত এর গ্রন্থ আমাদের এ মহান সাহাবিরই গল্প শোনাবে।
জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্তদের মাঝে অন্যতম একজন। জ্ঞান, গবেষণা, চিন্তা-ভাবনায় ছিলেন অত্যন্ত সূক্ষ্মদর্শী। আবয়ব ছিল আকর্ষণীয়। নৈতিকতা, মহত্বে ছিলেন দৃষ্টি আকর্ষক। সবমিলিয়ে তিনি ছিলেন সমাজের সকলের কাছে গ্রহণীয় ব্যক্তিত্ব। সকলের শ্রদ্ধার পাত্র। সূক্ষ্মদর্শী, নম্র-ভদ্র আবদুর রহমান ইবনু আউফ লড়াইয়ের ময়দানে কোমল থাকতেন না, হয়ে উঠতেন ময়দানের বীর। শত্রুদের সারি ভেদ করতেন, ব্যুহ ভেঙে দিতেন, ছত্রভঙ্গ করে দিতেন।
হজরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু মৃত্যুর সময় ছয় সদস্যের একটি শুরা কমিটি গঠন করেন। তাদের থেকে একজনকে খলিফা মনোনিত করার অসিয়ত করেন। হজরত আবদুর রহমান ইবনু আউফ ছিলেন সেই কমিটির একজন। তিনি নিজের ক্ষমতার দাবি প্রত্যাহার করে উম্মতের ফায়দার লক্ষ্যে খলিফা নির্বাচনের ভার নিজ কাঁধে তুলে নেন এবং উম্মতের সম্মতিক্রমে হজরত উসমান ইবনু আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহুকে খলিফা নির্বাচিত করেন।
ন্যায়-নিষ্ঠা আর নম্রতায় ভরপুর এই মহান সাহাবি ছিলেন দানবীর এবং দয়ালু। উম্মাহাতুল মুমিনিনের খাদিম। জীবনের পঁচাত্তরটি বসন্ত শেষে বত্রিশ হিজরি সনে তিনি রফিকে আলার দিকে নিজ যাত্রাপথ বেছে নেন। রাদিয়াল্লাহু আনহু ওয়া রাদু আনহু। মিসরের প্রখ্যাত মুহাক্কিক, লেখক ও সাহিত্যিক শাইখ মুহাম্মদ আশরাফ আল-ওয়াহশ রচিত এর গ্রন্থ আমাদের এ মহান সাহাবিরই গল্প শোনাবে।
আরবের এক অদম্য সাহসী ছেলে জুবাইর। পিতাহীন জুবাইর ছিলেন অতুলনীয় সাহস আর বুদ্ধিমত্তার অধিকারী। আরবের বৈরী পরিবেশ এবং মাতার শাসন তাকে কঠিন সংকল্পবদ্ধ এবং দুঃসাহসী করে তুলেছিল। তাকে ভয় পাইয়ে দেওয়ার মতো কোনো আরব ছিল না মক্কায়। দুর্দমনীয় এই বীর, কিশোর বয়সেই প্রবেশ করেন ইসলামের শান্ত-স্নিগ্ধ ছায়াতলে।
ইসলাম এবং ইসলামের নবির শত্রুরা তাকে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি করে। সয়ে যান তিনি ব্যথা-বেদনা, দুঃখ-দুর্দশা। কিন্তু একদিন নবিজিকে হত্যা করবে কাফিররা শুনে কিশোর জুবাইর অগ্নিশর্মা হয়ে উঠেন। উন্মুক্ত তরবারি হাতে ছুটেন পরিকল্পিত স্থানে। হয়ে যান ইসলামের জন্য প্রথম তরবারি উন্মোচক। বদর উহুদে আরবি এই বীরের নৈপুণ্য ছিল অবাক করার মতো। কুরাইশের বড় বড় বীরদের জাহান্নামে পাঠিয়েছেন নির্বিঘ্নে। আঘাতে আঘাতে জর্জরিত হয়েছেন নিজেও। তবুও লড়েছেন। ইসলামের এই মহাবীরের জীবন ছিল এমনই-সব বীরত্বপূর্ণ গল্পের সমাহার। ইসলামের জন্য তার অবদান চিরভাস্বর হয়ে থাকবে ইতিহাসের পাতায় পাতায়। রাদিয়াল্লাহু আনহু ওয়া রাদু আনহু। মিসরের প্রখ্যাত মুহাক্কিক, লেখক ও সাহিত্যিক শাইখ মুহাম্মদ আশরাফ আল-ওয়াহশ রচিত এর গ্রন্থ আমাদের এ মহান সাহাবিরই গল্প শোনাবে।
আরবের তরুণ এক ব্যবসায়ী। ব্যবসা পদ্ধতির নৈপুণ্যতার কারণে বিজ্ঞ-প্রাজ্ঞ ব্যবসায়ীরাও ছিল তার থেকে পিছিয়ে। ব্যবসা কৌশল দেখে অভিভূত হত গোত্রের অন্যান্যরা। হিংসে করত তাকে। অল্প সময়ে উন্নতি করা এই তরুণের সেবারের ব্যবসায়ী সফর ছিল শামদেশে। শামের এক খ্রিষ্টান রাহিবের কাছে শোনেন মক্কায় শ্রেষ্ঠ নবির আবির্ভাবের কথা।
শোনামাত্রই শাম ছেড়ে রওনা দেন মক্কাভূমিতে। জানতে চান মক্কার অস্বাভাবিক কোনো ঘটনার কথা। শোনতে পান, আবদুল্লাহর ছেলে মুহাম্মদ নিজেকে নবি দাবি করেছে এবং আবু বকর তার সত্যায়ন করেছে। ছুটে যান প্রিয় বন্ধু আবু বকরের কাছে। জানতে চান এবং জেনে নেন সবকিছু। সাথে সাথে গ্রহণ করেন ইসলামের অমীয় সুধা।
নম্র-ভদ্র ব্যবসায়ী এই তরুণের ওপর নেমে আসে বিপদের ছায়া। তালহা ইবনু উবাইদিল্লাহ সয়ে যান সবকিছু। অত্যাচার-অনাচার সয়ে দিনাতিপাত করেন কোনঠাসা হয়ে। হিজরত করেন জন্মভূমি ছেড়ে মদিনার পথে। ইসলামের জন্য উজার করে দেন নিজের সবকিছু। অর্থ-সম্পদ বিলিয়ে দেন অকাতরে। উহুদের নির্মম যুদ্ধে নবিজির ঢাল হয়েছিলেন, আঘাতে আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছিল গোটা দেহ। নবিজি তাকে ঘোষণা করেছিল জীবন্ত শহিদ হিসেবে। জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছিলেন তার জীবিত অবস্থাতেই। আল্লাহর এই মহান সৈনিক জঙ্গে জামালের যুদ্ধে সাবায়ি গোত্রের দ্বন্দপ্রিয় জাহান্নামিদের হাতে শহিদ হন। রাদিয়াল্লাহু আনহু ওয়া রাদু আনহু।
মিসরের প্রখ্যাত মুহাক্কিক, লেখক ও সাহিত্যিক শাইখ মুহাম্মদ আশরাফ আল-ওয়াহশ রচিত এর গ্রন্থ আমাদের এ মহান সাহাবিরই গল্প শোনাবে।
কিশোর বালক। সম্ভ্রান্ত হাশিমি গোত্রের আবু তালিবের পুত্র। থাকতেন নবিগৃহে। বুদ্ধিমান চঞ্চল এক বালক তিনি। একদিন নবি এবং নবিপত্নী খাদিজাকে দেখে ফেলেন নামাজ আদায় করতে। দেখে অবাক হন—কী করছেন তারা—প্রশ্ন জাগে। প্রশ্নের কথা খুলে বলেন চাচাতো ভাই নবি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে। জানতে চান কী করছিলেন তারা।
নবিজি তাকে দাওয়াত দেন। দ্বীনে ইলাহির দাওয়াত। গ্রহণ করে নেন আলি। হয়ে যান কিশোরদের মাঝে প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী। বদর, উহুদ, খন্দক, আহজাবের বীর তিনি। যার তরবারির ধার কুপোকাত করত আল্লাহর দুশমনদের। পরাজিত হত কাফিরদের বড় থেকে বড় বীর। তিনি ইলমের শহরের দরোজা আলি ইবনু আবি তালিব।
ইসলামের তৃতীয় খলিফা হজরত উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর পর খিলাফতের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন তিনি। কিন্তু আভ্যন্তরীণ সমস্যা তার বিজয়ের পথে বাধা হয়ে ছিল। খলিফা উসমান কত্যাকাণ্ড হয়ে ওঠে মুসলিমদের মাঝে বিভক্তির কারণ। জঙ্গে জামাল, জঙ্গে সিফফিনের মতো ভয়ানক যুদ্ধও অবলোকন করে মুসলিম বিশ্ব। চার বছরের খিলাফত জীবন শেষে মসজিদে লুকিয়ে থাকা এক ঘাতকের হাতে শাহাদাত বরণ করেন আল্লাহর পথের এই মহাবীর।
মিসরের প্রখ্যাত মুহাক্কিক, লেখক ও সাহিত্যিক শাইখ মুহাম্মদ আশরাফ আল-ওয়াহশ রচিত এর গ্রন্থ আমাদের এ মহান সাহাবিরই গল্প শোনাবে।
আরবের সম্ভ্রান্ত পরিবারের সুদর্শন বালকের নাম উসমান। নির্মল চরিত্রের অধিকারী, শান্ত-শিষ্ট-কোমল মননের অধিকারী। ধন-সম্পদ আর ঐশ্বর্যের কোনো অভাব নেই তার জীবনে। গোত্রের সবাই তাকে শ্রদ্ধা করে, ভালোবাসে। ব্যবসা-বাণিজ্যে সকলের চেয়ে ছিলেন এগিয়ে। একবার তিনি শামে তার ব্যবসায়ী কাফিলার সাথে ছিলেন। স্বপ্ন দেখেন তিনি। ঘুম ভেঙে যায় উসমানের।
জন্মভূমি মক্কার দিকে ঘোড়া হাকান তিনি। জানতে পারেন নবি মুহাম্মদের আত্মপ্রকাশের কথা। বিলম্ব করেন না ইসলাম গ্রহণে। সিদ্দিকে আকবারের মাধ্যমে হয়ে যান প্রথম সারির মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত। তারপর সয়ে যান জুলুম-অত্যাচার। উপহার-স্বরূপ নবিজির প্রিয় কন্যা রুকাইয়ার বিয়ে হয় তার সাথে। বাড়তে থাকে জুলুমের ধারা। হিজরত করেন আবিসিনিয়ায়। একবার, দুইবার। হিজরত করেন মদিনায়।
নরম মননের অধিকারী এই মহান সাহাবি ছিলেন লজ্জাশীলতার মূর্তপ্রতিক। দান-সাদকায় ছিলেন সর্বাগ্রে। জুড়ি ছিল না তার দানের সাথে। যুদ্ধের অস্ত্র থেকে শুরু করে সকল স্থানে ছিল উসমানের দানের অংশ। মনখুলে দান করতেন তিনি। নবি কন্যা রুকাইয়ার মৃত্যুর পর আরেক নবি কন্যা উম্মু কুলসুমের সাথে প্রণয় সূত্রে আবদ্ধ হন।
তিনি ইসলামের তৃতীয় খলিফা। উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর ইনতিকালের পর সর্বসম্মতিক্রমে তিনিই খিলাফতের আসন সৌভাগ্যমণ্ডিত করেন। বিজয়ের ধারা ছড়িয়ে দেন দূর থেকে বহুদূরে। খিলাফতি জীবনের বর্ণাঢ্য আয়োজন শেষে উগ্রদের হাতে শহিদ হন এই মহান খলিফা, দানবীর, জুননুরাইন। রাদিয়াল্লাহু আনহু ওয়া রাদু আনহু। মিসরের প্রখ্যাত মুহাক্কিক, লেখক ও সাহিত্যিক শাইখ মুহাম্মদ আশরাফ আল-ওয়াহশ রচিত এর গ্রন্থ আমাদের এ মহান সাহাবিরই গল্প শোনাবে।
ব্যস্ততায় ভরা জীবনে একটু সময় করে আল্লাহকে স্মরণ করার ফুরসত মেলে না আমাদের। এভাবে আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন থাকতে থাকতে একসময় আমাদের অন্তর মরে যায়। রাসূলুল্লাহ ঠিক এমনটিই বলেছেন—
‘যে ব্যক্তি তার রবের যিকর করে আর যে ব্যক্তি তার রবের যিকর করে না, তাদের দুজনের দৃষ্টান্ত হলো জীবিত ও মৃতের মতো।’ [বুখারি, ৬৪০৭]
তা হলে, মৃত অন্তরে সজীবতা ফিরিয়ে আনার উপায় কী? আল্লাহকে স্মরণ করা। বেশি বেশি যিকর করা। কিন্তু মনগড়া যিকর করলেই হবে না। যিকর হতে হবে মাসনূন। অর্থাৎ, রাসূলুল্লাহ -এর সুন্নাহভিত্তিক।
‘মুসলিমের সুরক্ষা’ বইটি তেমনই একটি বই। রাসূলুল্লাহ দৈনন্দিন জীবনে যেসব যিকর করতেন বা সাহাবিদের করতে উৎসাহিত করতেন, বক্ষ্যমাণ বইটি সেসবের-ই সংকলন। পাশাপাশি বইটিতে সুন্নাহ সম্মত ঝাড়ফুঁক বা রুকইয়াহ নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। মাসনূন দুআ, ওযীফা ও রুকইয়াহ’র জন্য ‘মুসলিমের সুরক্ষা’ বইটি শাইখ ড. সাঈদ কাহতানি -এর এক অনবদ্য সংকলন।
সবাই পৃথিবীর সেরা হতে চায়। তবে সেরা হওয়ার উপায় অনেকেই জানে না। সেরা হওয়ার প্রথম শর্তই হচ্ছে আদব-আখলাক সুন্দর হওয়া। আদব-আখলাক সুন্দর হলে সবাই উপকৃত হয়। ব্যক্তি যেমন শান্তিতে থাকে, তেমনি শান্তিতে থাকে তার পরিবার। আর এর সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়ে পুরো সমাজে।
তুমি কি নবিজির প্রিয় হতে চাও? কিয়ামাতের দিন প্রিয় নবিজির কাছাকাছি থাকতে চাও? যেদিন সবাই পেরেশান থাকবে, সেদিন নবিজির কাছাকাছি থাকতে হলে আদব-আখলাক সুন্দর হওয়া চাই। প্রিয় নবিজি বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে যার স্বভাব-চরিত্র সবচেয়ে সুন্দর হবে, কিয়ামাতের দিন সে আমার সবচেয়ে প্রিয় হবে এবং আমার সবচেয়ে কাছে থাকবে।
”আদব-আখলাক শেখার সবচেয়ে ভালো সময় শৈশবকাল। বড় হয়ে শেখা অনেক কঠিন। তাই বড়দের উচিত ছোটদের উত্তম আদব-আখলাক শিক্ষা দেওয়া। সুন্দর আদব-আখলাক গঠনের উদ্দেশ্যেই বহুদিনের প্রচেষ্টায় আমরা নিয়ে এসেছি ‘ছোটদের আদব সিরিজ’ এবং ‘ছোটদের আখলাক সিরিজ’। দুটি সিরিজের মোট বারোটি বই। যেখানে গল্পে গল্পে আদব ও আখলাকের বিভিন্ন দিক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ছোটদের উপযোগী করে সহজ সাবলীল ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য গল্প। গল্পগুলো বেছে নেওয়া হয়েছে কুরআন, হাদীস ও সীরাতের বিশুদ্ধ কিতাব থেকে। সাথে প্রতিটি পৃষ্ঠাতেই রয়েছে আকর্ষণীয় কারুকাজের রঙিন রঙিন ছবি; যা মুহূর্তেই শিশুদের মন কেড়ে নেবে।
আখলাক সিরিজটির বৈশিষ্ট্:
আখলাক সিরিজে রয়েছে ছয়টি বই।
প্রতিটি বইয়ে আছে ২৪ পৃষ্ঠা।
প্রতি পৃষ্ঠায় আছে মনকাড়া সব রঙ্গিন ছবি ও দৃশ্য। তাই শিশুরা বিরক্ত হবে না।
ছয়টি বইয়ের মোট ১৪৪ পৃষ্ঠায় পাবেন শত শত শিক্ষণীয় গল্প ও ঘটনা।
প্রতিটি গল্পই নেওয়া হয়েছে কুরআন, হাদীস ও সীরাতের বিশুদ্ধ কিতাব থেকে।
ফলে আপনার শিশু অনুপ্রাণিত হবে বিশুদ্ধ ইসলামি শিক্ষার আলোকে।
পুরো সিরিজটি সাজানো হয়েছে শিশুতোষ মন-মানসিকতার কথা মাথায় রেখে। তাই কোথাও জটিল শব্দ বা বড় বাক্য ব্যবহার করা হয়নি। সহজ সাবলীল করার চেষ্টা করা হয়েছে।
আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, যে শিশুরা নিজে থেকে এখনো বই পড়তে পারে না
মানে যাদের বয়স ছয় বছরের কম তারাও এই বইগুলো দেখতে ও শুনতে খুব পছন্দ করবে।
একটি সুন্দর গল্পই বদলে দিতে পারে আপনার শিশুর ভাবনার জগৎ।
আপনার শিশুর আদব-আখলাক যেন সুন্দর হয় সে উদ্দেশ্যেই সাজানো হয়েছে প্রতিটি পৃষ্ঠা, প্রতিটি গল্প।
- ছোটরা গল্প পড়তে পড়তেই জেনে যাবে শত শত বিশুদ্ধ হাদীস।
সবাই পৃথিবীর সেরা হতে চায়। তবে সেরা হওয়ার উপায় অনেকেই জানে না। সেরা হওয়ার প্রথম শর্তই হচ্ছে আদব-আখলাক সুন্দর হওয়া। আদব-আখলাক সুন্দর হলে সবাই উপকৃত হয়। ব্যক্তি যেমন শান্তিতে থাকে, তেমনি শান্তিতে থাকে তার পরিবার। আর এর সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়ে পুরো সমাজে।
তুমি কি নবিজির প্রিয় হতে চাও? কিয়ামাতের দিন প্রিয় নবিজির কাছাকাছি থাকতে চাও? যেদিন সবাই পেরেশান থাকবে, সেদিন নবিজির কাছাকাছি থাকতে হলে আদব-আখলাক সুন্দর হওয়া চাই। প্রিয় নবিজি বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে যার স্বভাব-চরিত্র সবচেয়ে সুন্দর হবে, কিয়ামাতের দিন সে আমার সবচেয়ে প্রিয় হবে এবং আমার সবচেয়ে কাছে থাকবে।
”আদব-আখলাক শেখার সবচেয়ে ভালো সময় শৈশবকাল। বড় হয়ে শেখা অনেক কঠিন। তাই বড়দের উচিত ছোটদের উত্তম আদব-আখলাক শিক্ষা দেওয়া। সুন্দর আদব-আখলাক গঠনের উদ্দেশ্যেই বহুদিনের প্রচেষ্টায় আমরা নিয়ে এসেছি ‘ছোটদের আদব সিরিজ’ এবং ‘ছোটদের আখলাক সিরিজ’। দুটি সিরিজের মোট বারোটি বই। যেখানে গল্পে গল্পে আদব ও আখলাকের বিভিন্ন দিক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ছোটদের উপযোগী করে সহজ সাবলীল ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য গল্প। গল্পগুলো বেছে নেওয়া হয়েছে কুরআন, হাদীস ও সীরাতের বিশুদ্ধ কিতাব থেকে। সাথে প্রতিটি পৃষ্ঠাতেই রয়েছে আকর্ষণীয় কারুকাজের রঙিন রঙিন ছবি; যা মুহূর্তেই শিশুদের মন কেড়ে নেবে।
আখলাক সিরিজটির বৈশিষ্ট্:
আখলাক সিরিজে রয়েছে ছয়টি বই।
প্রতিটি বইয়ে আছে ২৪ পৃষ্ঠা।
প্রতি পৃষ্ঠায় আছে মনকাড়া সব রঙ্গিন ছবি ও দৃশ্য। তাই শিশুরা বিরক্ত হবে না।
ছয়টি বইয়ের মোট ১৪৪ পৃষ্ঠায় পাবেন শত শত শিক্ষণীয় গল্প ও ঘটনা।
প্রতিটি গল্পই নেওয়া হয়েছে কুরআন, হাদীস ও সীরাতের বিশুদ্ধ কিতাব থেকে।
ফলে আপনার শিশু অনুপ্রাণিত হবে বিশুদ্ধ ইসলামি শিক্ষার আলোকে।
পুরো সিরিজটি সাজানো হয়েছে শিশুতোষ মন-মানসিকতার কথা মাথায় রেখে। তাই কোথাও জটিল শব্দ বা বড় বাক্য ব্যবহার করা হয়নি। সহজ সাবলীল করার চেষ্টা করা হয়েছে।
আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, যে শিশুরা নিজে থেকে এখনো বই পড়তে পারে না
মানে যাদের বয়স ছয় বছরের কম তারাও এই বইগুলো দেখতে ও শুনতে খুব পছন্দ করবে।
একটি সুন্দর গল্পই বদলে দিতে পারে আপনার শিশুর ভাবনার জগৎ।
আপনার শিশুর আদব-আখলাক যেন সুন্দর হয় সে উদ্দেশ্যেই সাজানো হয়েছে প্রতিটি পৃষ্ঠা, প্রতিটি গল্প।
- ছোটরা গল্প পড়তে পড়তেই জেনে যাবে শত শত বিশুদ্ধ হাদীস।
সেলিব্রেটি শব্দটি শুনলেই আমাদের মাঝে এক অন্যরকম মোহ কাজ করে। সেলিব্রেটি মানেই যেন বিশেষ কেউ। আজ আমরা ঝলমলে দুনিয়ার টলমলে কিছু মানুষকে সেলিব্রেটি বানিয়ে নিয়েছি, যারা কিনা বেহুদা আর অশ্লীল কাজের একনিষ্ঠ কর্মী ছাড়া কিছুই নয়। জীবনের পদে পদে আমরা তাদের অনুসরণ করি, কায়মনোবাক্যে তাদের-ই মতো হতে চাই। কিন্তু এরা কি সত্যিকারের সেলিব্রেটি?
সত্যিকারের সেলিব্রেটি তো তাঁরাই যারা যুগে যুগে ইসলামের ঝাণ্ডা বহন করেছেন, আল্লাহর কালিমাকে বুলন্দ করার জন্য নিজেদের জান ও মাল বিলিয়ে দিয়েছেন। তাঁরাই সত্যিকারের সেলিব্রেটি। তাঁরাই এই উম্মাহর কিংবদন্তি। যদি কাউকে জীবনের আদর্শ বানাতে হয়, যদি কাউকে জীবনের পদে পদে অনুসরণ করতে হয়, তবে তাঁরাই হতে পারেন আমাদের অনুপম আদর্শ।
আমরা কি কখনো তাঁদের মতো হতে চেয়েছি? কখনো কি তাঁদের সম্পর্কে একটুখানি জানার চেষ্টা করেছি? তা হলে কীভাবে আমরা তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করব?
বিভিন্ন যুগে ইতিহাস রচনা করা উম্মাহর দশ জন কিংবদন্তির জীবনের গল্প নিয়ে এসেছি আমরা। দুনিয়ার সস্তা সেলিব্রেটিদের ভিড়ে আমরা যেন সত্যিকারের সেলিব্রেটি, সত্যিকারের কিংবদন্তিদের আমাদের আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করতে পারি, সে লক্ষ্যেই সন্দীপন প্রকাশন নিয়ে এসেছে ‘উম্মাহর কিংবদন্তিরা’।
সাহাবীরা হলেন নববী ইলমের ধারক ও বাহক। কিন্তু, তাদের জীবনী সম্পর্কে আমাদের জানাশোনা সাধারণত খুব কম। বেশিরভাগ মানুষ ১০-১২ জনের বেশি সাহাবীর নাম পর্যন্ত জানেন না, তাঁদের জীবনী জানা তো অনেক দূরের কথা!
‘তারা ঝলমল’ বইটি ৩২ জন সাহাবীর জীবনের গল্প নিয়ে। নবিজীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাথে তাঁদের সম্পর্ক কেমন ছিলো, নিজেদের শ্রেষ্ঠ গুণটি কিভাবে তারা ইসলামের তরে কাজে লাগিয়েছেন এই নিয়েই ‘তারা ঝলমল’।
তাকওয়া হচ্ছে মুমিনের সম্বল, আখিরাতের সফরের গুরুত্বপূর্ণ পাথেয়। যার মাঝে তাকওয়া নেই, সে ভালো-মন্দের পার্থক্য করতে পারে না। কারণ, তাকওয়ার বদৌলতেই মানুষ ফুরকান (ভালো-মন্দের পার্থক্যকারী গুণ) লাভ করে। তাকওয়া বা আল্লাহভীতিই মানুষকে মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে, আর ভালো কাজে উৎসাহী করে।
তাকওয়া মুত্তাকীদের বৈশিষ্ট্য, পাথেয় লাভের পথ। তাকওয়া মানুষকে জান্নাতের পথে পরিচালিত করে, জাহান্নামের পথ থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। তাকওয়ার মাধ্যমেই অর্জিত হয় আল্লাহর সন্তুষ্টি।
আমাদের এই বইটি তাকওয়ার মাহাত্ম নিয়েই। এই বইতে তাকওয়া নিয়ে তিন জন পূর্বসূরী ইমামের আলোচনা সংকলন করা হয়েছে। তাকওয়ার গুরুত্ব ও মাহাত্ম নিয়ে কুরআন-সুন্নাহর বক্তব্য ও সালাফদের তাগিদ আলোচিত হয়েছে এতে। আমাদের পিপাসার্ত অন্তরে তাকওয়ার বীজ রোপণে বইটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, ইন শা আল্লাহ।
সূর্যের আলোর অনুপস্থিতিতে আমরা বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালাই। সূর্যের আলোর আয়োজনটুকু তাতে পাওয়া না-গেলেও আমেজটুকু তো পাওয়া যায়! এটাই বা কম কীসে!
হাদীসের সবচেয়ে মুবারক মজলিসগুলো পেয়েছিলেন সাহাবায়ে কেরাম (রদিয়াল্লাহু আনহুম)। তাঁরা হাদীসের সবক পেয়েছিলেন সরাসরি রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছ থেকে। উম্মাহর শেষের দিকের প্রজন্ম হওয়ায় খুব স্বাভাবিকভাবেই সোনালি সেই সুযোগগুলো থেকে বঞ্চিত হয়েছি আমরা। কিন্তু হাদীস নিয়ে তাদাব্বুর তথা গভীর চিন্তাভাবনা আমাদেরকে সেই আমেজটুকু উপহার দিতে পারে।
হাদীস তো ওহির-ই আরেকটি রূপ। কুরআন নিয়ে চিন্তাভাবনা করা যেমন জরুরি, ঠিক তেমনি প্রয়োজন হাদীস নিয়েও চিন্তাভাবনা করা। তবেই ওহির আলোয় জীবন হবে আলোকিত, মনন হবে উদ্ভাসিত।
রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুবারক হাদীসগুলো থেকে বাছাইকৃত ৪০টি হাদীস নিয়ে টুকরো টুকরো তাদাব্বুরের সংকলন আমাদের এই ‘তাদাব্বুর ফিল হাদীস’ বইটি। এখানে যেমন রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীসের নিগূঢ় তত্ত্ব আলোচিত হয়েছে, তেমনি উঠে এসেছে সেগুলোর শিক্ষা ও জীবনঘনিষ্ঠ মাসআলা। নববি হাদীসের গভীরতায় পাঠক এক নতুন আলোর সন্ধান পাবেন এ বইটি পড়ে, ইনশাআল্লাহ।
যুদ্ধকালীন সংকটে প্রতিটি দেশ যেভাবে তার নাগরিকদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা দিয়ে থাকে, ফিতনার ঘনঘটা দেখা দিলে সূরা কাহফও মুমিনদেরকে ঠিক সেভাবেই সুরক্ষা দেয়। বাতলে দেয় ফিতনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সঠিক পথ ও পন্থা।
সূরা কাহফ ঈমানকে শক্তিশালী ও পূর্ণ করার পাশাপাশি সংরক্ষণের উপায়ও বাতলে দেয়। এই সূরাতে মানুষের মৌলিক শক্তিমত্তার তিনটি শাখা (ইলম, অর্থ-সম্পদ এবং ক্ষমতা ও রাজত্ব) তুলে ধরা হয়েছে। এটা এমন ইলম যা সৎপথে পরিচালনা করে, এমন সম্পদ যা সৎপথে চলতে সহায়ক হয় আর এমন রাজত্ব যা সৎপথের অভিযাত্রাকে নিরাপদ ও সংরক্ষিত রাখে। কারণ, দ্বীনের ওপর টিকে থাকতে এসবের কোনো বিকল্প নেই। সত্যি বলতে শুধু ব্যক্তিমানুষ না, গোটা একটি সভ্যতার সাফল্যও মূলত এই নিয়ামকগুলোর ওপর নির্ভরশীল।
মানব সভ্যতার শৌর্যবীর্য ও শক্তিমত্তার প্রধান এই তিন উপলক্ষই আবার নিদারুণ দুর্বিপাক আর পরীক্ষার ক্ষেত্র তথা ফিতনার উর্বর ভূমি। মুমিনমাত্রই পার্থিব জীবনে নানা বিপদাপদের আঘাত আর শত্রুপক্ষের বিষাক্ত দুরভিসন্ধির শিকার হয়ে থাকে। পাশাপাশি নিজের নানাবিধ দুর্বলতা, হতাশা আর অবসাদ তো রয়েছেই।
জীবনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এঁটে বসা ফিতনার এসব বজ্র আঁটুনি থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হলো ওহির আলোকশক্তিকে আঁকড়ে ধরা। অর্থাৎ কুরআনের নূরানি শক্তিতে বলিয়ান হয়ে উঠা। আর তা রয়েছে সূরা কাহফে। এটি আপনাকে ফিতনার ঘনঘটা থেকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে সক্ষম। পাঠক, বক্ষ্যমাণ বইটিতে আপনি খুঁজে পাবেন সূরা কাহফের সেই মুক্তির মশাল, যার সাহায্যে মুক্তি পাবেন যাবতীয় ফিতনা থেকে।
আমাদের আদি-নিবাস ছিল জান্নাত। কোনো এক কারণে আমাদেরকে দুনিয়ায় আসতে হয়েছে। এখান থেকে আমরা আবারও জান্নাতে পাড়ি জমাব ইন শা আল্লাহ। তার আগে জান্নাতে যাওয়ার পাথেয় অর্জন করে যাব এই দুনিয়া থেকেই।
দুঃখের বিষয় হলো, আমরা অনেকেই আমাদের চূড়ান্ত গন্তব্যের কথা ভুলে যাই। অল্প সময়ের জন্য অতিথি হয়ে আসা এই পৃথিবীকেই আমরা চিরস্থায়ী আবাস ভেবে ভুল করি। গন্তব্যের কথা ভুলে গিয়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর মাধ্যমকেই আঁকড়ে ধরি।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই আমাদের জন্যই বলে গিয়েছেন,
‘দুনিয়াতে অপরিচিত হয়ে বসবাস করো, যেন তুমি একজন মুসাফির।’
হ্যাঁ, অস্থায়ী এই দুনিয়াতে আমরা জীবনযাপন করব একজন মুসাফিরের মতো। এই সফরে আমরা জান্নাতের পাথেয় অর্জন করব। জান্নাতের পাথেয় অর্জনের এই সফরে আমাদের সঙ্গী হবে ইমাম বাইহাকি রচিত প্রায় ১০০০ বছর পূর্বের কিতাব ‘আয-যুহদুল কাবীর’। বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটি সেটির-ই অনুবাদ।
পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট, হ্যান্ডসাম ক্যারিয়ার, অতঃপর একটি সুন্দর সংসার—আমাদের অধিকাংশের জীবনের লক্ষ্য থাকে এরকমই। সুন্দর সংসার খুবই গুরুত্বপূর্ন একটি ফ্যাক্টর। কেননা, একটি সুন্দর সংসার আমাদের দ্বীন পালন অনেকটাই সহজ করে দেয়।
তাই, সংসার নিয়ে ভাবনার ডালপালায় ঘুরে বেড়ানো আমাদের জন্য অপ্রয়োজনীয় বা অহেতুক কিছু নয়। বরং এটি আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। বিয়ে তো আমাদের অর্ধেক দ্বীন।
‘সংসার ভাবনা’ বইয়ের আবির্ভাব সেই প্রয়োজন থেকেই। জীবনসঙ্গী কেমন হওয়া উচিত, নারীবাদের বিষাক্ত ক্যান্সার থেকে তাকে মুক্ত রাখা, পরিবার পরিকল্পনা ও সন্তান প্রতিপালন ইত্যাদি বিষয়ের উপর বাস্তবধর্মী আলোচনা ওঠে এসেছে এই বইতে। ইন শা আল্লাহ, আমাদের পারিবারিক জীবন আরও মধুময় করে তুলতে বইটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।
আপনি কি ধনী মুসলিম হতে চান?
আপনি কি জানতে চান মুসলিম হয়েও কীভাবে প্রচুর টাকা উপার্জন করা যায়?
কীভাবে এ প্রতিযোগিতায় অন্যদের টেক্কা দেয়া যায়?
ভাবছেন, এতো টাকা দিয়ে করবটা কী?
সফল মুসলিম উদ্যোক্তা হতে কী কী দক্ষতা প্রয়োজন?
ওপরের প্রশ্নগুলোর উত্তর নিয়েই ‘সম্পদ গড়ার কৌশল’ বইটি। বইটিতে আরও স্থান পেয়েছে বর্তমান সময়ের বেশ ক’জন সফল মুসলিম উদ্যোক্তাদের নাম ও কর্মগাঁথা, যা জেনে আপনিও উদ্যোক্তা হওয়ার অনুপ্রেরণা পাবেন। জানতে পারবেন সম্পদ গড়ার চমৎকার সব কৌশল। আরও জানতে পারবেন সম্পদ গড়ার এ পথে আপনাকে কী কী চ্যালেঞ্জ মুকাবিলা করতে হবে।
প্রিয় পাঠক, আপনি কি সাদ ইবনু আবী ওয়াক্কাস আর উসমান ইবনু আফফান রদিয়াল্লাহু আনহুমদের মতো ধনবান মুসলিম ব্যবসায়ী হতে চান? তাহলে সম্পদ গড়ার কৌশল পাঠে আপনাকে স্বাগতম!
একসময় মুশরিকরা idol (মূর্তি) পূজা করত। এখনকার মুশরিকরা ideology (মতাদর্শ) পূজা করে। পশ্চিমারা আজ বিভিন্ন বস্তুবাদী মতবাদকে সেরা ধরে নিয়ে ইসলামকে আক্রমণ করে। ইসলাম কেন তাদের মনমতো হলো না—এসব জানতে চায়। এটা ওই মক্কা আর গ্রীসের মুশরিকদের পুরোনো কলাকৌশলের-ই নতুন রূপ। ওই একই পদ্ধতিতেই এর মোকাবিলা করতে হবে।
কিন্তু অমুসলিমরা একটার পর একটা আক্রমণাত্মক প্রশ্ন করেই যাবে, আর মুসলিমরা সেগুলোর রক্ষণাত্মক জবাব দিয়েই যাবে—এটা দাওয়াহর আদর্শ পদ্ধতি নয়। যাদের অন্তরে রোগ আছে, তারা একের-পর-এক প্রশ্ন আনতেই থাকবে। এগুলোর প্রত্যুত্তরে বই লিখতে থাকলে বইয়ের লাইব্রেরি হয়ে যাবে, কিন্তু বিদ্বেষীদের প্রশ্ন তখনও শেষ হবে না।
তা ছাড়া ইসলামের কিছু বিধান এমন আছে, যেগুলো অমুসলিম তো দূরের কথা, মুসলিমদের কুপ্রবৃত্তিই মানতে চাইবে না। এমনকি কিছু হুকুমের ব্যাপারে আল্লাহ তো জানিয়েই দিয়েছেন যে, এগুলো আমাদের অপছন্দ হবে। কিন্তু কুপ্রবৃত্তির বিরুদ্ধে গিয়ে সেগুলো পালন করতে হবে। ‘আজকে এগুলো অমুসলিমদেরকে পছন্দ করিয়েই ছাড়ব’—এমন মনোভাব নিয়ে যদি কেউ নাস্তিকদের সাথে তর্ক শুরু করে, তাহলে প্রবল সম্ভাবনা আছে যে, তার্কিক সাহেব আল্লাহর দ্বীনকেই বিকৃত করে ছাড়বেন। আবার কিছু বিধান আছে যেগুলো বাস্তবে প্রয়োগ করে দেখানো ছাড়া কখনোই সেগুলোর সুফল বোঝা যাবে না। যেমন—ইসলামি অর্থনীতি বা বিচারনীতি বাস্তবে প্রয়োগ না করে শুধু এর পক্ষে বইয়ের পর বই লিখে যাওয়াটা পূর্ণাঙ্গ সমাধান না।
‘সত্যকথন ২’ বইটিতে নাস্তিক-অজ্ঞেয়বাদী-সেক্যুলার কর্তৃক সৃষ্ট সংশয়ের প্রত্যুত্তর দিয়েই ক্ষান্ত হননি লেখকেরা, সেগুলোর ব্যবচ্ছেদও করেছেন। সংশয়ের দোলাচলে দোল খাওয়া মুসলিমদের সংশয় নিরসনে বইটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ইন শা আল্লাহ।
কিশোর বয়স বড় অদ্ভুত একটা সময়। এ বয়সে শরীর-মন সবই থাকে উচ্ছ্বল-প্রাণবন্ত। প্রাণপ্রাচুর্যে ভরা এ বয়সটাকে তাই পরবর্তী জীবনে স্বপ্নের মতোই লাগে।
পা পিছলে যাবার শুরুটাও হয় এ বয়সেই। অনাবিল মন-মস্তিষ্ক আবিলতায় ছেয়ে যায় উপযুক্ত সাহচর্য না পেলে। ক্লান্তিহীন প্রাণ ক্লেদাক্ত হয়ে পড়ে অসৎসঙ্গে—আর তাতেই ঘটে সর্বনাশ!
এ সর্বনাশের নাগপাশ এড়াতে চাইলে উচ্ছ্বল এ বয়সেই দ্বীনি চিন্তা-চেতনার চর্চা প্রয়োজন। আর চর্চার জন্যে চাই অনুসন্ধিৎসু মন। ‘স্বপ্ন-রঙিন দিন’ উপন্যাসটির প্লট সাজানো হয়েছে সেরকমই কিছু জিজ্ঞাসু কিশোর চরিত্রকে ঘিরে। কেন্দ্রীয় চরিত্র মাহমুদ কীভাবে তার ভাইয়ার কাছ থেকে দ্বীন ও দ্বীনি চেতনা সম্পর্কে দীক্ষা পায়, তা-ই আমরা দেখব সুলিখিত এই উপন্যাসের মাধ্যমে।
কিশোর ও তরুণ বয়েসী পাঠকেরাও এতে পাবে অনেক জানা-বোঝার খোরাক।
দুনিয়ার সব নারী থেকে একজন পুরুষ বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু এমন একজন থাকতে পারে যে খুব গোপনে তার মনে জায়গা করে নিতে পারে।”- শাইখ জাওয়াদ কথাটা একদম বেদ্বীনি কারও বেলায় যেমন সত্য, তেমন সত্য দ্বীন মানতে চাওয়া অনেক ছেলের ক্ষেত্রেও। তাদের সালাত, সিয়াম, কিয়াম-এর ফাঁক গলে হুট করে এক নারী প্রবেশ করে ফেলে তার অন্তরে। সফেদ অন্তরে ফেলে দেয় গুনাহের দাগ। ‘শেষের অশ্রু’- তেমন এক ইবাদতপ্রেমী যুবক ইয়াসারকে নিয়ে সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা একটি গল্প। যে ইয়াসারের চোখে আখিরাত ছাড়া কিছুই ছিল না, সেই ইয়াসারকে গ্রাস করেছিল ডাগর কালো দুটি চোখ। মসজিদে অন্তর লেপ্টে থাকা যুবকটির অন্তর লেপ্টে গিয়েছিল এক রুটির দোকানের শেষের বাড়িটায়। সারশীর নামক রূপসীর সৌন্দর্যের মাধ্যমে শয়তান বশ করে ফেলেছিল ওকে। শয়তানের আঁটা প্রেমের ফাঁদে আটকে গিয়েছিল দুনিয়াবিমুখ ইয়াসারের মন। এক সময়কার ইবাদাতগুজার ইয়াসার হারিয়ে যাচ্ছিল অন্ধকার পথে। সেখান থেকে কীভাবে সে ফিরে এল, কীভাবে তাওবার পথে পা বাড়াল—তা নিয়েই আমাদের এ বই।
নবিজি ﷺ-এর জীবনী অত্যন্ত মহান ও মর্যাদাপূর্ণ একটি বিষয়। নবি ও রাসূল হিসেবে মুহাম্মাদ ﷺ-এর আগমন এবং ইসলামের উত্থান সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায় তাঁর সীরাত থেকে। অসহনীয় কষ্টের পর আল্লাহ কীভাবে সাফল্য দেন, তা উপলব্ধি করা যায় নবি ও সাহাবিদের জীবনী থেকে।
অন্য যে কারও জীবনীর চেয়ে নবিজীবন অধ্যয়নে শিক্ষা লাভ করা যায় অনেক অনেক বেশি। আল্লাহ তাআলা কীভাবে তাঁর নবিকে প্রস্তুত করলেন, মানুষের অন্তরে কীভাবে প্রোথিত করলেন তাঁর কিতাবের শিক্ষা, অনেক শক্তিশালী ও বিশাল বিশাল শত্রুদলের বিরুদ্ধে ছোট্ট একটি দলকে কেমন করে বিজয় দান করলেন, চারদিকে মিথ্যে আর পাপ-পঙ্কিলতার সয়লাবের মাঝে ইসলামের সত্য ও সৌন্দর্যকে কীভাবে সমুন্নত করলেন—এসবের মাঝে নিহিত রয়েছে বহু প্রজ্ঞা।
নবি ﷺ-এর জীবনী পড়ে মুসলিমরা তাদের দ্বীনকে গভীরভাবে বুঝতে শেখে। তাই নবিজির জীবদ্দশা থেকে নিয়ে এখন পর্যন্ত আলিমগণ নবিজীবন-সংক্রান্ত তথ্যের বিশুদ্ধতার ব্যাপারে খুবই সাবধানী। কিন্তু অনেকেই নবিজীবন নিয়ে কাজ করতে গিয়ে এতে মনগড়া, অবান্তর আলোচনা প্রবেশ করিয়েছে। ফলে দিনশেষে দেখা যায়, ইসলামের নবির জীবনীতে অনেক তথ্য স্বয়ং ইসলামের শিক্ষারই বিপরীত।
‘রাসূলে আরাবী’ বইটি বিশুদ্ধ উৎসের ভিত্তিতে লেখা রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর জীবনী। এই বইটি লিখতে লেখক সাহায্য নিয়েছেন কুরআন, বিশুদ্ধ তাফসীর, বিশুদ্ধ হাদীস এবং অন্যান্য বিশুদ্ধ সীরাহ-গ্রন্থের মতো বিশুদ্ধ উৎসের।
কুরআন পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ। এর সৌন্দর্য এতটাই অনুপম যে, তার অনুরূপ কোনো গ্রন্থ আজ অবধি কেউ রচনা করতে পারেনি, অনাগত দিনেও পারবে না। কিন্তু কেন? এই প্রশ্নের উত্তর আরবি না-জানা বা আরবি জানলেও কুরআনের ভাষা-অলঙ্কার সম্পর্কে গভীরভাবে অধ্যয়ন না করা একজন বংলাভাষী পাঠকের কাছে আজীবন অধরাই থেকে যায়। তিনি সারাজীবন শুধু শুনেই যান যে, কুরআন আল্লাহর নবির শ্রেষ্ঠ মুজিযা। এটি তাঁর নুবুওয়াতের সত্যতার প্রমাণ। কিন্তু তা কীভাবে—এটি তার বোধগম্য হয় না।
এই বইতে কুরআনের সৌন্দর্যের খণ্ড খণ্ড চিত্তাকর্ষক চিত্রগুলোকে সরলভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। আশা করি বইটি একজন বাংলাভাষী পাঠকের কাছে কুরআনকে আরও জীবন্ত, জীবনঘনিষ্ঠ ও মাধুর্যময় করে তুলতে সহায়তা করবে ইনশাআল্লাহ।
কুরআন সাধারণ কোনো গ্রন্থ নয়। এটি একটি জীবন্ত জীবন-বিধান। কুরআন মুমিনদের জন্য শিফা ও রাহমাহ। মুমিনের অন্তরের ব্যাধি থেকে শুরু করে জাগতিক সকল সমস্যার সমাধান দেয় কুরআন। তবে কুরআনি সমাধান পেতে হলে কুরআনকে ভালোভাবে বুঝতে হবে। কুরআন নিয়ে তাদাব্বুর করতে হবে। ডুব দিতে হবে কুরআনের গভীর থেকে গভীরে।
কুরআনের অর্থ অনুধাবন হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও অনুরাগ সৃষ্টি করে। কুরআন বোঝার মধ্য দিয়েই তৈরি হয় আত্মার পরিশুদ্ধি, হৃদয়ের পরিতৃপ্তি আর তাকদীরের ফায়সালার প্রতি সন্তুষ্টি। কুরআন বোঝার মধ্য দিয়েই অর্জিত হয় ইয়াক্বীন ও সুদৃঢ় বিশ্বাস, অর্জিত হয় আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্ক ও দ্বীনি আত্মমর্যাদাবোধ, সৃষ্টি হয় আখিরাতের ফিকির এবং আল্লাহর কাছে পরিপূর্ণ প্রতিদান লাভের সজীব প্রত্যাশা।
‘কুরআন: জীবনের গাইডলাইন’ বইটিতে ড. ইয়াদ কুনাইবীর অনেকগুলো হৃদয়কাড়া আলোচনা স্থান পেয়েছে। এ বইটিতে রয়েছে মানুষের আত্মিক পরিশুদ্ধির বহুবিধ উপকরণ। সাহাবায়ে কেরাম রদিয়াল্লাহু আনহুম আল্লাহ-প্রেমের অমৃত-সুধা পান করে তাঁর শর্তহীন আনুগত্য ও কুরআনময় জীবন গঠনের যে উপমা পেশ করেছেন, তা অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় ফুটে উঠেছে বইটিতে। পাশাপাশি মানবজীবনের বহুমুখী জাগতিক ও আত্মিক সমস্যার সমাধান রয়েছে পুরো বইটির পাতায় পাতায়।
কুরআন আমাদের প্রতি আল্লাহর নাযিলকৃত প্রত্যাদেশ। এতে আমাদের জন্য রয়েছে হিদায়াত ও পথনির্দেশ। কুরআন নাযিলের অন্যতম উদ্দেশ্যই হলো বান্দা এর আয়াতগুলো নিয়ে ভাবনার সমুদ্রে ডুব দিবে। চিন্তার তলদেশ থেকে মনি-মুক্তো কুড়িয়ে আনবে। যারা নিজেদেরকে কুরআন তিলাওয়াতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে রাখে, কুরআনের আদেশ-নিষেধ-উপদেশ নিয়ে ভাবে না, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে তিরষ্কার করেছেন। কেউ যদি কুরআন নিয়ে চিন্তা-ভাবনা না করে তবে বুঝতে হবে তার অন্তর তালাবদ্ধ হয়ে আছে। তার উচিত অবিলম্বে এই তালা খোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং আল্লাহর এই তিরষ্কারে পতিত হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করা। কুরআন নিয়ে আমরা কিভাবে ভাববো, এই ভাবনা থেকে আমরা কী ধরনের স্বাদ আস্বাদন করতে পারব সেই বিষয়গুলোই তুলে ধরা হয়েছে ‘কুরআন বোঝার মজা’ বইটিতে। কুরআন কেন্দ্রিক বিভিন্ন ধরনের অনেকগুলো লেখার সমষ্টি এই বইটি, যা পাঠকের সামনে কুরআনের সৌন্দর্য ও শক্তি চমৎকারভাবে তুলে ধরবে ইনশাআল্লাহ।
এই কুরআনের বৈশিষ্ট্য:
১. বড় হরফে ছাপা
২. সৌদি ফন্টে ছাপা
৩. সাইজে বড় (৯.৫*৬.৮)
৪. আকর্ষণীয় ছাপা ও বাঁধাই
৫. সংরক্ষণের জন্য সুইডিশ বোর্ডের একটি বক্স আছে
৬. পুরোটাই মেলে যাবে যার কারণে হাত দিয়ে ধরে পড়া লাগবে না
পাঠক জনপ্রিয়তা অর্জন করা ‘হারিয়ে যাওয়া মুক্তো‘র পর উস্তাদ আলি হাম্মুদার লেকচার অবলম্বনে দ্বিতীয় বই ‘কলবুন সালীম: নির্মল অন্তর, নির্মল জীবন’। এবারের বইটি ভিন্ন ধাঁচের। এতে স্থান পেয়েছে ঈমান জাগানিয়া একাধিক গল্প, সংশয় থেকে বেঁচে থাকার উপায়, দুআ কবুলের কৌশল, এছাড়া আত্মশুদ্ধি এবং আমলের উদ্দীপনা নিয়ে উস্তাদ আলি হাম্মুদার অসংখ্য উপদেশবাণী।
উস্তাদকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার প্রয়োজন নেই। যুবকদের নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত কাজ করে চলা ফিলিস্তিনি এই আলিম সকলের পরিচিত মুখ। উস্তাদের লেকচারগুলোর মতই এই গ্রন্থের প্রতি পরতে পরতে পাঠক আবিষ্কার করবেন পূর্বসূরিদের রেখে যাওয়া অমিয় আদর্শ। কখনও গল্পের ভাষায়, কখনও নসিহতের ভাষায় এখানে নির্মল জীবন গড়ার পাথেয় তুলেছেন ধরেছেন তিনি। তাই কুরআনে আসা ইবরাহীম (আ.)-এর বিখ্যাত দুয়ার অবলম্বনে সংকলক বইটির নামকরণ করেছেন ‘কলবুন সালীম’, অর্থাৎ বিশুদ্ধ অন্তর। একটি শুদ্ধ জীবন গড়ার প্রত্যয় নিয়ে রচিত এই গ্রন্থটি সকলের জন্য হতে পারে একটি চমৎকার উপজীব্য।
বয়ে চলা নদীর মতো জীবনও চলতে থাকে আপন গতিতে। নায়ের মাঝি যেমন ঢেউয়ের তালে তালে বৈঠা বেয়ে সামনে এগিয়ে যায়, জীবন নায়ে চড়ে আমিও সেভাবে এগিয়ে যাচ্ছি প্রতিদিন। এই চলতি পথে হর-হামেশা দেখা হয়ে যায় অনেক দৃশ্যের সাথে। যার মাঝে কোনটাতে থাকে সংগতি আর কোনটাতে অসংগতি। যেগুলিতে অসংগতির দেখা পেয়েছি সেগুলোকে সযত্নে তুলে নিয়েছি। তারপর তা দিয়ে মালা গেঁথে উপস্থাপন করেছি পাঠকের সমীপে।
ভিন্ন ভিন্ন পঁচিশটি লেখা দিয়ে সাজানো হয়েছে এই বইটি। একেকটা একেক রঙের, একেকটা একেক বর্ণের। তবে সবগুলোই কোন না কোন অসংগতির সাথে প্রাসঙ্গিকতার সূত্রে আবদ্ধ।
উত্তাল সমুদ্র। দিগন্ত দেখা যাচ্ছে না। এর মাঝে এগিয়ে চলা জাহাজ কি পারে লক্ষ্য ছেড়ে অজানার দিকে এগোতে? না। বহু দিকে বহু স্রোত বয়ে যেতে পারে। বাতাসের গতি পক্ষে না-ও থাকতে পারে। কিন্তু জাহাজকে এগিয়ে যেতে হয় বাতিঘরের দিকে। পৌঁছাতে হয় গন্তব্যে। নাহলে যে যাত্রীদের সমাধি হবে অথৈ সাগরে।
অবিশ্বাস আর সংশয়ের নানা চোরাস্রোত লক্ষ্যভ্রষ্ট করতে চায় বিশ্বাসের তরীকে। ডুবিয়ে দিতে চায় গন্তব্যের বহু আগেই। দক্ষ নাবিক কিছুতেই দিকহারা হয় না। বিরুদ্ধ স্রোত আর সকল ঝোড়ো হাওয়াকে মোকাবিলা করে অবিচলভাবে এগোতে থাকে গন্তব্যের দিকে। যে গন্তব্যে আছে চিরমুক্তি। কালো মেঘ কেটে এক সময় সূর্য উঁকি দেয়। সব অন্ধকারকে পেছনে ফেলে যাত্রীরা এগোয় আলোকিত সে পথের দিকে।
সত্য সন্ধানীদের বিশ্বাসের পালে হাওয়া দিতেই এই বইটি।
অন্ধকার গুহা। মুখ খোলা, কিন্তু আলো আসছে না। আকাশে যে রোদ নেই! অবশেষে সূর্য উদিত হল। রোদের প্রথম সে পরশ ছড়িয়ে গেল প্রান্তরে, পাহাড়ে, দ্বীপান্তরে। সে আলো চুইঁয়ে ঢুকলো আঁধার গুহাতেও।
আলো? সে এক আহ্বানের আলো।
কেমন করে এলো সে আলো?
নগরীর পাহাড় থেকে অনেক কাল আগে এক যুবক এলাকাবাসীকে ডেকেছিলেন। যিনি পরিচিত ছিলেন সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত নামে। দস্যুরা আক্রমণ করেছে ভেবে সবাই পড়িমরি করে পাহাড়ের দিকে ছুটে গিয়েছিল সে ডাকে। কিন্তু না! তিনি দুনিয়ার বিপদের কথা জানাতে তাদের ডাকেননি। ডেকেছিলেন পরকালের ভয়াবহ বিপদের কথা জানাতে। কেউ শোনেনি। তবে আল্লাহর ইচ্ছায় একসময় সে যুবকের দেখানো পথে বহু মানুষ আলোর দিশা পেয়েছিল।
আজ বহু বছর পর কিছু দস্যু সেই আলোর মশালকে নিভিয়ে দিতে পঙ্গপালের মত আক্রমণ করেছে। ওদের লক্ষ্য, একজন মুমিনের জীবনে সবচে’ দামী সম্পদ ঈমানকে ছিনিয়ে নেয়া। মুসলিমদের জীবনটাকে উদ্দেশ্যহীন বানিয়ে ফেলা। অন্ধকার জগতের সেই ডাকুদের বিরুদ্ধে এ বই ক্ষুদ্র এক প্রচেষ্টামাত্র। যেন ঈমানদারেরা তাদের হীনমন্যতা ঝেড়ে ফেলে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে।
আর গুহার অধিবাসীরা ফিরে আসে অন্ধকার থেকে আলোতে।
বাংলাদেশে অনলাইনে ইসলামবিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে বহু আগে থেকে। সে তুলনায় নাস্তিক-ইসলামবিদ্বেষীদের জবাব দেয়ার ধারাটা নতুন। যদিও আরো আগে থেকেই এর শুরু, কিন্তু এতে জোয়ার এসেছে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে। বিশেষ করে গত বছর এ নিয়ে বেশ কিছু বই প্রকাশিত হয়েছে, জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আরো অনেক লেখক ও প্রকাশক এ ব্যাপারে বই প্রকাশে এগিয়ে এসেছেন। বেশ অনেকগুলো বই অল্প কয়েকদিনের মধ্যে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। এটা ভালো খবর, নিঃসন্দেহে।
সত্যকথন থেকে আমাদের একটা ইচ্ছা, (কিংবা স্বপ্ন বলা যায়) হল – নাস্তিক-ইসলামবিদ্বেষীদের আদর্শ ও বিশ্বাসের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা একেবারে নষ্ট করে দেয়া। এমন কিছু করার জন্য অবশ্যই অনেক মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহন প্রয়োজন।
তবে একই সাথে কিছু চিন্তার জায়গাও থেকে যায়। এ চিন্তার কথা আমরা অনেক বার ব্যক্ত করেছি। নাস্তিক-ইসলামবিদ্বেষিদের জবাব দেয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময়ই যুক্তি, বিজ্ঞান কিংবা প্রচলিত পশ্চিমা স্ট্যান্ডার্ডের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা দেখা যায়। “দেখুন বিজ্ঞানই প্রমাণ করে ইসলাম ঠিক”, “ইসলাম মানবিক”, “ইসলাম যৌক্তিক”। এসব স্ট্যান্ডার্ডে আমরা ইসলামে সঠিক প্রমাণ করতে চাই। সমস্যা হল
এ মাপকাঠিগুলো পশ্চিমের বানানো। এর চেয়ে উত্তম, সর্বোত্তম মাপকাঠি মুসলিমদের কাছে আছে। ইসলাম। ইসলামি শারীয়াহ এগুলোর চেয়ে অনেক সুপিরিওর। ইসলাম ইনফেরিওর কিছু না যে, পশ্চিমের মাপকাঠিতে আমাদের ইসলামে সঠিক প্রমাণ করতে হবে। আর পশ্চিমা মানবরচিত ত্রুটিপূর্ণ কাঠামোতে ইসলামের অনেক কিছুই খাপ খাবে না। এটাই স্বাভাবিক। এটা ঐ কাঠামোর সমস্যা।
সিংহকে আপনি ইঁদুরের গর্তে ঢোকাতেও পারবেন না। তবুও নানা কারণে ইসলামের পক্ষের লেখাগুলোতে এ বিষয়গুলো, এবং পরিমিত পরিমাণে আসতেও পারে। সমস্যা বাঁধে যখন লেখক কিংবা তার্কিকরা কুর’আন-সুন্নাহ ও সালাফ-আস-সালেহিনের বক্তব্যের চেয়ে পশ্চিমা কাঠামো অনুযায়ী “কেন ইসলাম সঠিক” – এটা প্রমানে বেশি জোড় দিয়ে ফেলেন। আমাদের আশঙ্কার জায়গা হল ইতিমধ্যে অনেক লেখার ক্ষেত্রেই নানা কারণে এধরণের প্রবণতা খুব বেশি করে চোখে পড়ছে।
এমন ক্ষেত্রে আমাদের মনে রাখা উচিত মুসলিম হিসেবে আমাদের মূল ফ্রেইম অফ রেফারেন্স কী। আমাদের মূল উদ্দেশ্য কী, আমাদের অনুসরনীয় পদ্ধতি কী। আর প্রশ্নগুলোর উত্তর হল কুরআন-সুন্নাহ, ইসলামের সত্যকে প্রকাশ করা, এবং সালাফ-আস সালেহিনের অনুসরণীয় পদ্ধতি। কে কী বললো, তার বদলে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ﷺ কী বলেছেন – সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কে কীভাবে ব্যাখ্যা করেছে, বা কতো ভিন্ন ভাবে কোন কিছুকে ব্যাখ্যা করা যায়, তার বদলে আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হল সাহাবা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম কীভাবে ঐ জিনিসটিকে বুঝেছেন, কীভাবে আমল করেছেন।
দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমানে অনেক লেখা হলেও খুব কম লেখাতেই এ বিষয়গুলোকে মূল ফোকাসে রাখা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়গুলোর চেয়ে, সুখপাঠ্য হওয়া, বিনোদনমূলক হওয়া, বিজ্ঞানসম্মত হওয়া, পশ্চিমা মাপকাঠিতে উত্তীর্ন হওয়া – ইত্যাদি নানা তুলনামূলকভাবে অনেক কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনযোগ বেশি পাচ্ছে।
এক্ষেত্রে একটি উজ্জ্বল ব্যতিক্রম হল সত্যকথনের নিয়মিত লেখক, মুহাম্মাদ মুশফিকুর রহমান মিনারের লেখা। ইসলাম সংক্রান্ত যেকোন বিষয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে, আলোচনার ক্ষেত্রে, তর্কের ক্ষেত্রে, ডিফেন্ড করার ক্ষেত্রে – আমাদের প্রাথমিক অ্যাপ্রোচ কেমন হওয়া উচিত, তার উত্তম উদাহরণ মুহাম্মাদ মুশফিকুর রহমান মিনারের লেখাগুলো। তাঁর লেখাতে সালাফ আস-সালেহিন এবং হক্বপন্থি উলামার অনুসৃত পদ্ধতির ছাপ পাঠক দেখতে পাবেন। এবং এ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
দীর্ঘদিন ধরেই মুহাম্মাদ মুশফিকুর রহমান মিনার ইসলামবিদ্বেষীদের প্রশ্নের জবাব নিয়ে লেখালেখি। ইন শা আল্লাহ এবারের একুশে বই মেলাতে বের হচ্ছে তাঁর প্রথম বই, অন্ধকার থেকে আলোতে। আলহামদুলিল্লাহ।
সত্যকথনের পাঠকদের আমরা বিশেষ ভাবে বলবো, ‘অন্ধকার থেকে আলোতে’ বইটি সংগ্রহ করার। নাস্তিকতা সংক্রান্ত বের হওয়া সাম্প্রতিক সব গুলো বইয়ের মধ্যে যদি একটি বই-ই আপনারা কেনার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে আমরা জোরালোভাবে এ বইটি রেকমেন্ড করবো।
অলসতা এমন এক কঠিন রোগ, যা কারও ওপর চেপে বসলে, তার ইহকাল-পরকাল সাঙ্গ করে দেয়। শুধু তাই নয়, একসময় অলস ব্যক্তি তার স্বাভাবিক মানবতাবোধও হারাতে থাকে। তার মেধা শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বিলুপ্ত হতে থাকে তার মানবিক বৈশিষ্ট্য।
অলসতা কোনও মন্ত্রী-মিনিস্টার চেনেনা। বৃদ্ধ, যুবক, পুরুষ, নারী, দ্বীনদার, দুনিয়াদার—সকলেই অলসতার আক্রমণের শিকার হতে পারে। তাই এব্যাপারে সবার সমান সচেতন হওয়া চাই। আপাতদৃষ্টিতে ব্যক্তি যতই পরিশ্রমী হোক, সচেতনতার প্রশ্নে সে-ও আলাদা কেউ নয়। ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রহিমাহুল্লাহ) বড় যথার্থ বলেছেন,
‘লক্ষ্য অর্জনে প্রতিটি পরিশ্রমী ব্যক্তিকেই আলস্যও বিরতির মুখোমুখি হতে হয়।’ [মাদারিজুস সালিকিন, ১/২৭৮]
বইটি পড়ে আমল করার মাধ্যমে পাঠক তার অলসতাও দুর্বলতা অনেকাংশেই কমিয়ে আনতে পারবে। এরপরও যদি আলস্য চলেই আসে, তবে তার সাথে কেমন হবে আপনার আচরণ, কীভাবে তাকে প্রথম সুযোগেই ঘরের দুয়ার থেকে তাড়ানো যায়—সে সম্পর্কেও বইটিতে আলোকপাত করা হয়েছ।
ইসলামপন্থী তরুণ লেখকদের বইপত্রের শুরুতে ‘সম্পাদকের কথা’ টাইপ শিরোনামে ভারী ভারী কথা লেখার প্রচলন। আমি নিজেও বিভিন্নসময় এ কাজ করেছি। তবে এই বই নিয়ে অলরেডি অনেক ভারী কথা হয়ে গেছে; আমি হালকা মেজাজে দুয়েকটা কথা বলতে চাচ্ছি। … আস্তিকতা-নাস্তিকতা বিষয়ক লেখালেখি ইসলামপন্থীদের থেকে বছর দশেক আগে ব্লগের যুগ থেকেই চলে আসছে। ব্লগগুলোতে যখন ধর্মবিদ্বেষীদের আধিপত্য, তখন কিছু মুখলিস ভাই সময়ের দাবি মেটাতে কলম তুলে নিলেন। …
ব্লগের যুগ পেরিয়ে আমরা ঢুকলাম ফেসবুক যুগে, এরপর এলো বইয়ের যুগ। নাস্তিকদের জবাব দিয়ে লেখাগুলো কাগজের পাতায় উঠে এলো, মলাটবদ্ধ অবস্থায় ঘরে ঘরে পৌঁছে গেল। দেখা যায় এই বইগুলোর সিংহভাগেই নাস্তিকদের জবাব দেওয়াটাকেই ফোকাস করা হয়। এই ধারাটার অবশ্যই দরকার আছে, তবু মনে হতো যদি এমন একটা বই লেখা হতো যেখানে তাদের প্রশ্ন ধরে ধরে জবাব না দিয়ে বরং তারা যে ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে এসব আপত্তি তোলে, সেই ভিত্তিটাকেই নাড়িয়ে দেওয়া যাবে! … সেই আশার পালে হাওয়া দিলেন রাফান আহমেদ ভাই। তিনি লিখলেন ‘বিশ্বাসের যৌক্তিকতা’, খুব ছোট্ট কিন্তু ওজনদার এ বইটা হচ্ছে ট্রেইলার। ট্রেইলারের কুঁড়িটা পুষ্প হয়ে ফুটল ‘অবিশ্বাসী কাঠগড়ায়’– এ।
‘অবিশ্বাসী কাঠগড়ায়’– এর পাণ্ডুলিপি পড়তে গিয়ে দুটো কারণে বিস্মিত হই। প্রথমটা হলো মুগ্ধতাজনিত বিস্ময়। পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল–আরে এটা তো সেই ধারার বই যার জন্য অ্যাদ্দিন ধরে অপেক্ষা করেছি! আর দ্বিতীয় কারণ হলেন লেখক নিজে। রাফান ভাই পেশায় চিকিৎসক। উদয়াস্ত খাটছেন রোগীদের পেছনে, রাতের পর রাত জাগছেন, এতটুকু ফুরসৎ নেই। ওনার সাথে যখন পাণ্ডুলিপি নিয়ে আলোচনায় বসেছি তখনও একটু পরপর ফোন আসছে হাসপাতাল থেকে। এমন আদ্যন্ত ব্যস্ত একজন মানুষ এত তথ্যবহুল আর গভীর আলোচনার পৌনে তিনশো পৃষ্ঠার প্রমাণ সাইজের একটা বই লিখে ফেলেছেন, বিশ্বাস করা কঠিন। আসলে আল্লাহ্ যাকে দিয়ে চান তাকে দিয়ে করান।
বইটাকে ‘ব্যতিক্রমী’ বলছি এজন্যই যে, এটা টিপিক্যাল ‘নাস্তিকদের আপত্তির জবাব’ টাইপ লেখা না। এখানে লেখক হুমায়ূন আজাদদের মনস্তত্ত্ব, তাদের আদর্শের স্ববিরোধিতা এবং তারা অবিশ্বাসের মোড়কে যে সংকীর্ণ বিশ্বাসগুলো লালন করে সেগুলোকে দর্শন ও বস্তুবাদী বিজ্ঞানের আলোকে উন্মোচন করেছেন। বইটার গুরুত্ব আরো বেড়েছে একারণে যে লেখক মুসলিম স্কলারদের থেকে খুব বেশি সাহায্য না নিয়ে বরং হুমায়ূন আজাদরা যে পশ্চিমা দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিকদের বক্তব্যকে প্রবাদতুল্যজ্ঞান করে, সেই দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিকদের বক্তব্য দিয়েই আজাদদের চিন্তার দৈন্যকে স্পষ্ট করেছেন।
বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ের টপিকগুলো এত ব্যাপক যে, এর প্রতিটি নিয়েই একেকটি বই হওয়া সম্ভব। এগুলোকে একই বইয়ে স্থান দিতে গিয়ে অনেকস্থানে লেখক আরো বিস্তারিত আলোচনা করতে পারেন নি। আমরা আশা করবো তিনি এবং এই পথের অন্য পথিকরা সে বিষয়গুলো নিয়ে আরো বৃহৎ কলেবরে, আরো বিশ্লেষণাত্মক আলোচনাসমৃদ্ধ লেখা আমাদের উপহার দেবেন।
উপদেশ!
এক অতি সহজলভ্য বিষয়ের নাম। কিন্তু সহজলভ্য হলেই তো আর উপকারী হয়ে যায় না! উপকারী হতে হলে, তাতে থাকতে হয় উপকারিতার গুণ। আর উপদেশ বা নাসীহাহ তো তখনই উপকারী হয়, যখন তাতে থাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পাথেয়। এমন নাসীহাহ মুমিন বান্দাকে নাড়া দেয়, তার ঘুমন্ত সত্তাকে জাগিয়ে তুলে।
অভিশপ্ত দুনিয়ার উত্তাপে টগবগ করে ফুটতে থাকা আত্মাকে শান্ত করতে নাসীহাহ’র চেয়ে উত্তম কিছু কি আছে?
হৃদয়-প্রশান্তকারী সেরকম-ই একগুচ্ছ নাসীহাহ’র মলাটবদ্ধ রূপ আপনার হাতের এ বইখানা। এতে স্থান পেয়েছে, কুরআন-সুন্নাহ ও সীরাতের পাতা থেকে তুলে আনা বিষয়ভিত্তিক প্রেরণাময় কথামালা। এ ছাড়াও রয়েছে সালাফের জীবনী থেকে কুড়িয়ে আনা মুক্তোতুল্য অসংখ্য নাসীহাহ।
দ্বীনে ফিরেছেন কিংবা এখনো ফেরেননি—এমন যে কারও জন্যেই ‘নাসীহাহ’ হতে পারে হৃদয়ের খোরাক! আর বিশ্বাসী বান্দা কি নাসীহাহ থেকে বিমুখ হতে পারে?